নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সহযোগিতা না করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোর অসহযোগিতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এমনটিই বলেন তিনি।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বারের অডিটরিয়ামে নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে গভর্নর এসব কথা জানান। 

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে নারী উদ্যোক্তারা অভিযোগ করেন,দেশের ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও ব্যাংকগুলো প্রকৃত নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ না দিয়ে দেওয়ার নামে কালক্ষেপণ করছে। এ ছাড়া বিনা জামানতে ঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। একই সঙ্গে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা আত্মীয় ও বাড়ি বা জমি ব্যাংকগুলো জামিনদার (গ্যারান্টি) হিসেবে চায়। 

নতুন নারী উদ্যোক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা নতুন উদ্যোক্তা, গ্যারান্টি বা গ্যারান্টার পাব কোথায়? আমাদের কেন সরকারি কর্মকর্তা গ্যারান্টি দিবে এমন প্রশ্ন করে তাঁরা জানান, ব্যাংকগুলো যেসব উদ্যোক্তাদের ঋণ দিচ্ছে তাও উৎপাদন খাতে কাজে আসছে না। বরং ঋণ গ্রহীতারা পারিবারিক কাজে এসব অর্থ ব্যয় করছে।

এ সময় সহজ শর্তে বিনা জামানত ও বিনা গ্যারান্টিতে ঋণ প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ করেন নারী উদ্যোক্তারা। একই সঙ্গে নারীবান্ধব ব্যবসায়িক নীতিমালা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্লট বরাদ্দের দাবি জানান উদ্যোক্তারা।  

উদ্যোক্তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে নারীবান্ধব ঋণ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পুনরর্থায়ন তহবিল ১০০ কোটি টাকা রয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে দেশে ১০ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। দেশের নারী সমাজ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।’

যোগ্যতা থাকার পরও কোনো নারী উদ্যোক্তা যদি ঋণ সহায়তা না পান তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হট লাইন-১৬২৩৬ নম্বরে অভিযোগের পরামর্শ দেন গভর্নর। নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যাগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে লিখে জানানোর জন্যও আহ্বান জানান তিনি। 

তাতেও যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট চিঠি আকারেও উদ্যোক্তাদের সমস্যা লিখে পাঠাতে বলেন গভর্নর। গভর্নর বলেন, ‘এরপরও সমস্যার সমাধান না হলে সরাসরি আমার নিকট চিঠি লিখুন। আমি আপনাদের সমস্যা জেনে সরাসরি সমাধানের চেষ্টা করব।’ 

ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে ডিসিসিআই সহসভাপতি হুমায়ুন রশিদ, পিস ফাউন্ডেশনের আফজাল হোসেনসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নারী উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।