বাংলাদেশি নারীরা যৌনদাসী হচ্ছে সিরিয়ায়!
ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি নারীদের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অপহরণ করে সিরিয়ায় পাঠিয়ে গৃহকর্ম ও যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
র্যাব-৩-এর কমান্ডার খন্দকার গোলাম সরওয়ারের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
গত বছর এ ধরনের ৪৫টি ঘটনার অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান খন্দকার গোলাম সরওয়ার। তিনি বলেন, গত বছর শাহিনূর নামের এক নারী অপহৃতদের কাছ থেকে পালিয়ে তাঁর মাকে ফোন করেন। এর পর ওই নারীর মা র্যাবকে ঘটনার কথা জানান। এ ঘটনার পর র্যাব আরো অভিযোগ পায়।
গোলাম সরওয়ার বলেন, ‘শাহিনূর বলেছে, লেবানন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেসহ আরো পাঁচ নারীকে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর অজ্ঞাত লোকদের কাছে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সিরিয়ায় নিয়ে তাকে দিয়ে কখনো গৃহকর্ম, কখনো যৌনকর্ম করানো হতো।’
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘সিরিয়ার বাংলাদেশি দূতাবাসের মধ্যমে ৩৪ বছর বয়সী ওই নারীকে ঢাকা আনা হয়েছে। সে খুবই অসুস্থ। নড়তে-চড়তে পারছে না। তার কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) তথ্যমতে, বাংলাদেশি ৮০ লাখ নারী বিদেশি কাজ করে। এর সিংহভাগই আরব উপসাগরীয় দেশ, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কাজ করে।
তবে প্রতারক নিয়োগকর্তা নারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে অন্য দেশে পাঠিয়ে দেয় বলে অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। ফলে তাদের দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয়।
আরব উপসাগরীয় দেশগুলোতে যেসব বাংলাদেশি নারী পাঠানো হয়, তাদের বেশির ভাগই গৃহকর্ম করতে বাধ্য হয়।
সরওয়ার বলেন, পাঁচ বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। ফলে সেখানে অপহরণ বেড়েছে। প্রতারক চক্র লেবানন, জর্ডানের কথা বলে নারীদের সিরিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত আট প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান সরওয়ার। তিনি বলেন, এদের মধ্যে মালিক ও কর্মী রয়েছে। এরা জ্ঞাত ও অজ্ঞাতভাবে অপহরণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। ভালো কাজ পাইয়ে দিতে তাদের কাছ থেকে গড়ে ৩০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এক বছরের চুক্তি করা হয়। বলা হয়েছে, তারা মাসে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা করে পাবে।
সরওয়ার বলেন, ‘নিরীহ, অশিক্ষিত ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা সিরিয়া সম্পর্কে কিছু জানে না। তারা মনে করে, তারা লেবানন বা জর্ডানে রয়েছে।’