নাইজারে অভ্যুত্থানের পর জেরারেল টচিয়ানিকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ঘোষণা
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজোমকে পদচ্যুত করার দুই দিন পর দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান আবদুরহমানে টচিয়ানি নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ঘোষণায় তিনি নিজেকে ‘মাতৃভূমির নিরাপত্তার জন্য গঠিত জাতীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে’ অভিহিত করেন। খবর আলজাজিরার।
ভাষণে ৬২ বছর বয়সী জেনারেল টচিয়ানি অভ্যুত্থানের বিষয়ে বলেন যে, এই হস্তক্ষেপ ধীরলয়ের ও অনিবার্য ক্ষতির হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য অপরিহার্য ছিল। তিনি আরও বলেন যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাজোম জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে সব কিছু ভালো চলছে…কিন্তু রূঢ় বাস্তবতা হলো মৃত মানুষের স্তুপ, ঘরবাড়ি ছাড়া অপমানিত জনতা আর হতাশা।
টচিয়ানি বলেন, ‘অনেক বড় আত্মত্যাগের পরেও নিরাপত্তার জন্য নেওয়া ব্যবস্থা দেশের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।’ তবে তার কথায় কবে নাগাদ অসামরিক নেতৃত্ব ফিরে আসবে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
জেনারেল টচিয়ানিকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের এলিট ইউনিটটির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিযুক্ত করা হয়। তিনি নাইজারের পশ্চিমাঞ্চলীয় টিলাবেরি এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকাটি সেনাবাহিনীর সৈন্য সংগ্রহের জন্য আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। টচিয়ানি ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা রাজনীতিক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদেও ইসৌফুর খুব কাছের মানুষ হিসেবেও পরিচিত।
২০২১ সালে মার্চ মাসে সদ্যপদচ্যূত প্রেসিডেন্ট বাজোম নির্বাচিত হওয়ার পর শপথের অপেক্ষায় থাকার সময় প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের নিয়ন্ত্রণ নিতে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
গত বুধবার টচিয়ানির সৈন্যরা নাইজারের রাজধানী নিয়ামেয়তে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে বাজোমকে অবরুদ্ধ করে। এই তৎপরতায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নেতারা নিন্দা জানায়। তবে বাজোম কোথায় রয়েছেন বা তাকে আটক করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নাইজারের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমাদৌ আবদ্রামানে বুধবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন যে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ও খারাপ শাসনের কারণে নিরাপত্তাবাহিনী সরকারের শাসন ক্ষতার অবসান ঘটিয়েছে।
আবদ্রামানে আরও জানান যে, দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে কারফিউ, বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে প্রজাতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান। সৈন্যরা কোনো বিদেশি শক্তির তৎপরতার বিরুদ্ধেও হুঁশিয়ারী দেয় ও জানায় যে বাজোমের সুস্থতাকে তারা সম্মান জানায়।