বাংলাদেশের কোচ হতে পারতেন মার্টিন ক্রো
২০০৭ সালে ডেভ হোয়াটমোর বাংলাদেশের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর একজন হাই প্রোফাইল কোচের খোঁজে নেমেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ শুরুর পর নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি মার্টিন ক্রোর দারস্থও হয়েছিলেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। সেই সময় অন্য একটি চুক্তিতে না জড়ালে বাংলাদেশের কোচ হিসেবেও দেখা যেতে পারত সদ্য প্রয়াত ক্রোকে।
বিসিবি থেকে তাঁকে যখন প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন মার্টিন ক্রো মাত্রই স্কাই টেলিভিশনের চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন দীর্ঘমেয়াদে। তাই আগ্রহ ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোচের পদে যোগ দিতে পারেননি তিনি। তখন বিসিবি বাধ্য হয়েই দায়িত্ব দেয় অস্ট্রেলীয় কোচ জেমি সিডন্সকে।
সেই সময় মার্টিন ক্রোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বিসিবির পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। সেই স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি যখন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তার কিছুদিন আগেই স্কাই টেলিভিশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন মার্টিন ক্রো। তবে তাঁর কথায় আমি বুঝতে পেরেছি বাংলাদেশর কোচ হতে তিনি আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকায় আর বাংলাদেশে আসতে পারেননি।'
তবে মর্টিন ক্রো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাফল্য কামনা করেছিলেন বলে জানান বিসিবির এই পরিচালক, 'কোচ হওয়ার সুযোগ পেয়ে আসতে না পারলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্য কামনা করেছেন মার্টিন ক্রো। এটি আমার কাছে খুবই ভালোলাগার ছিল। আজ না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি, তাঁর সঙ্গে কথা বলার সেই স্মৃতিগুলো আমার খুবই মনে পড়ছে এখন।'
সেই সময় তাঁকে কোচ করতে পারলে বাংলাদেশের জন্য ভালোই হতো বলে মনে করেন ববি, 'সেই সময় আমাদের খুবই আগ্রহ ছিল তাঁকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার। কোনো কারণে হয়তো তাঁকে আনা সম্ভব হয়নি, তবে তিনি আসতে পারলে বাংলাদেশের ক্রিকেট উপকৃত হতো।'
বাংলাদেশর ক্রিকেটের সাফল্য কামনা করা সেই মার্টিন ক্রো দীর্ঘ চার বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবারই মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন। ১৯৯৫ সালে ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়ার আগে সে সময় তাঁর দেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রান (৫,৪৪৪), ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস (২৯৯), সবচেয়ে বেশি শতক (১৭টি) আর সবচেয়ে বেশি অর্ধশতকের (৩৫টি) রেকর্ড ছিল তাঁর।
শুধু টেস্ট নয়, ওয়ানডেতেও মর্টিন ক্রো ছিলেন সফল ব্যাটসম্যান। ১৪৩ ম্যাচে চারটি শতক, ৩৪টি অর্ধশতকসহ চার হাজার ৭০৪ রান সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। ১৯৯২ বিশ্বকাপে মার্টিন ক্রোর বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব আর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওপর ভর করে সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল কিউইরা।