ফরিদপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা
ফরিদপুরে একশ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইনে ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান (৪৭) সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ফরিদপুর সিআইডি। মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর (৬৪), সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত (৪৭), সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর এপিএস এএইচএম ফুয়াদ (৪৮) ও ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল (৪৫)।
আজ বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মামলাটি দায়ের করেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি এমএ জলিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামি সিদ্দিকুর রহমানের স্থাবর সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব ও ডাক বিভাগ হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই করে অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে আসামি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেক খন্দকার মোহতেশাম বাবর এর মাধ্যমে ফরিদপুর শহরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারি কাজকর্মগুলো যোগসাজশে ৩% থেকে ৫% কমিশন বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিত। এসব ক্ষেত্রে তার একচেটিয়া অধিপত্য ছিল। তাকে এসব কাজে সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং ইমতিয়াজ হাসান রুবেল সহযোগিতা করত। বাবরের পরে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেন মন্ত্রী থাকাকালীন সিদ্দিক ফরিদপুর জেলাসহ বিভিন্ন জেলার টেন্ডার কমিশনের মাধ্যমে তৎকালীন মন্ত্রীর এপিএস ফুয়াদ, বরকত ও রুবেল হেলমেট বাহিনী ও হাতুড়ি বাহিনীর সমন্বয়ে নিয়ন্ত্রণ করত। সিদ্দিক ফরিদপুর শহরের রেল স্টেশনের পাশে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে দীর্ঘদিন যাবত বালু ও পাথরের ব্যবসা করেছে। একচেটিয়া অধিপত্য দেখিয়ে ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স, সিএনবি ঘাট, টেপাখোলা বাজার নিয়ন্ত্রণ করত। সিদ্দিক তার দাপট দেখিয়ে টেপাখোলা গরুর হাট দীর্ঘদিন যাবত কৌশলে ইজারা নিয়ে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো।
এসব ক্ষেত্র থেকে তিনি এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় সহযোগিতায় চাঁদাবাজি, নীতি বহির্ভূতভাবে অপরাধের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সম্পদ নিয়ম বহির্ভূতভাবে সর্বমোট একশ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা উপার্জন করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইনে অপরাধ করেছেন।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইন ২০১২ (সংশোধনী/২০১৫) এর ৪(২) ধারার অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উল্লেখিত ধারায় মামলা করার অনুমোদন প্রদান করে ঢাকার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম)।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি এমএ জলিল জানান, বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে একশ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইন ২০১২ (সংশোধনী/২০১৫) এর ৪(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার মামলা নং ২৮।