ভুয়া এলসি দেখিয়ে ৮৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ, রূপালী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত
রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক খুলনার শামস ভবন করপোরেট শাখা থেকে ভুয়া এলসি খুলে ৮৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ব্যাংকটির ওই শাখার দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পাওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বরখাস্তকৃতরা হলেন, ওই শাখার ডিজিএম জাকির ইবনে বোরক ও সিনিয়র প্রিন্সপ্যাল অফিসার মুরাদ হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকটির জেনারেল ম্যানেজার তাজউদ্দিন আহমেদ। ব্যাংক টাকা আদায়ের ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
শামস ভবনে অবস্থিত রূপালী ব্যাংকের ওই শাখার ডিজিএম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বিলকিস বেগম। কয়েকদিন আগে এই শাখায় নিযুক্ত হওয়া ডিজিএম জানান, ব্যাংকের বৈদেশিক শাখায় অনিয়ম ধরা পড়ায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে সাত সদস্যের একটি টিম তদন্ত করে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকটির পরিচালক ও সিইও জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘মেসার্স প্রিয়াম ফিস এক্সপোর্ট লিমিটেডেরে ৩২টি এলসির ৫৬ কোটি টাকা এবং মেসার্স বায়োনিক সিফুড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ২১টি এলসির ২৮ কোটি টাকায় অনিয়ম ধরা পড়ে। এই কাজে সহায়তার জন্য সাবেক ডিজিএম বোরাক ও ফরেন এক্সচেঞ্জের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মুরাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের এই শাখা থেকে এই দুই কোম্পানি প্রতিবছর ১৬০ থেকে ১৮০ কোটি টাকা মাছ রপ্তানি করে।
এ বিষয়ে প্রিয়াম ফিস এক্সপোর্ট লিমিটেডের মালিক শেখ মো. আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কিছু টাকা ব্যাংককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকাও দেওয়া হবে।’ অন্যদিকে, বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বায়োনিক ফিস এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইলফোনে বারবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাবেক ডিজিএম বোরাক মোবাইলফোনে বলেন, ‘এমডি অফিস হতে এই বরখাস্তের আদেশ এসেছে। আমি বর্তমানে জিএম অফিসে সংযুক্ত রয়েছি।’ তবে, ব্যাংকের ৮৪ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।