কিশোরী নুসরাত যখন পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক
ঝালকাঠিতে এক ঘণ্টার জন্য জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক পদে প্রতীকী দায়িত্ব পালন করেছে কিশোরী নুসরাত জাহান। আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মো. শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করে সে।
কিশোরী নুসরাত জাহান ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। নুসরাত জাহান একজন ভালো ও সৎ মানুষ হতে চায়। সে পশ্চিম চাঁদকাঠি বাসন্ডা এলাকার গাড়িচালক মো. নুর নবী ভুইয়া ও গৃহিণী রোজিনা বেগম দম্পতির সন্তান।
গার্লস টেকওভার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি বৈশ্বিক কার্যক্রম। কন্যা শিশুরা সমান সুযোগ এবং সম-অধিকার পেলে, বদলে দিতে পারে তাদের নিজের জীবন। তাদের আশপাশের সমাজ এবং সমাজের মানুষদের এমন বিশ্বাস থেকেই গার্লস টেকওভার কর্মসূচি এই উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এ কর্মসূচির মাধ্যমে একজন কিশোরী, কন্যা শিশু অথবা তরুণীকে নেতৃত্ব প্রদানকারীর ভূমিকা পালন করতে সহায়তা করা হয়। যাতে তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং নিজের স্বপ্ন পূরণে সে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মো. শহিদুল ইসলাম ফুলেল শুভেচ্ছায় তাকে বরণ করেন। অফিশিয়াল কভার ফাইলের মাধ্যমে এই কিশোরীকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন তিনি। বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ উপলক্ষে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। দায়িত্ব পেয়ে নুসরাত জাহান পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে অফিস চত্বরের নিচে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনসিটিএফ ভলান্টিয়ার নয়ন তালুকদার, বীথি শর্মা বণিক, এনসিটিএফ জেলা সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস ও শিশু সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম।
এক ঘণ্টার প্রতীকী দায়িত্ব পালনকালে নুসরাত জাহান বলে, ‘আমি একজন কিশোরী হয়েও ঝালকাঠি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের (ডিডি) দায়িত্ব পালন করতে পেরে নিজেকে ধন্য ও গর্বিত মনে করছি। এতে আমি আরও আত্মবিশ্বাসী এবং নিজের স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি।’
এ সময় নুসরাত বেদে পল্লী, চরাঞ্চল ও আবাসন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রজনন এবং পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি এবং জনশক্তি ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার অভিমত ব্যক্ত করে।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নারীদের বা আমাদের কন্যাদের একটু বেশি সুযোগ দিলে তারা অনেক কিছুই করতে পারে। তাদের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আজ আমার খুবই ভালো লাগছে। কিশোরী জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের চেয়ারে বসে তাঁর অবস্থান থেকে বক্তব্য দিচ্ছে। এ বয়সে আমরা ঠিকমতো কথাও বলতে পারতাম না।’