লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপনির্বাচনের গেজেট স্থগিত
লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের গেজেট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেছেন, তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আইনে আছে, রিটার্নিং অফিসারের ফলাফল ঘোষণার পর যদি কেউ সংক্ষুব্ধ হন অথবা যদি কোনো যৌক্তিক তথ্য-উপাত্ত নির্বাচন কমিশনের নজরে আসে, নির্বাচন কমিশন ওই আসনের গেজেট প্রজ্ঞাপন স্থগিত রেখে অভিযোগ আমলে নেবেন। যথাযথ তদন্তের পর যে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে, তার ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
ইসি সচিব বলেন, আইনে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত দুদিন ধরে লক্ষ্মীপুরের একটি কেন্দ্র এবং ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সরাইল আসন যেটা তার একটি কেন্দ্রের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, সেটা নির্বাচন কমিশন বিশ্লেষণ করেছে এবং সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রাসাশক, পুলিশ সুপার এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা সরেজমিন তদন্ত করে যে রিপোর্ট দিবেন, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবেন।
গেজেট প্রকাশ স্থগিত কি না এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘আইনে বলা আছে, গেজেট প্রজ্ঞাপন কার্যক্রম স্থগিত রেখেই তদন্ত কার্যক্রম চলবে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, তদন্ত প্রতিবেদনে ভোট কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন নির্বাচন বাতিল বা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারে।
গতকাল সোমবার লক্ষ্মীপুর উপনির্বাচনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে একের পর এক সিল মারছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, যিনি সিল মারেন, তার নাম আজাদ হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তবে, সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।
লক্ষ্মীপুর-৩ উপনির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ রাকিব হোসেন, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. সামছুল করিম ও আম প্রদীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সেলিম মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনে মোট ভোটার চার লাখ তিন হাজার ৭৪৪ জন। ১১৫ টি ভোটকেন্দ্রের ৮২৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। ভোট পড়ে ৩১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পান তিন হাজার ৮৪৬ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী (নৌকা) অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। ২৮ হাজার ৫৫৬ ভোট বেশি পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন।
১৩২টি ভোটকেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী নৌকা প্রতীকে অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু পান ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি) অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পান ৩৭ হাজার ৭৫৮ ভোট।
জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) আব্দুল হামিদ ভাসানী তিন হাজার ১৪২ ভোট, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল (গোলাপ ফুল) ৫৬১ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (আম) ৭৩৯ ভোট পান।