চোরকে চিনে ফেলায় বৃদ্ধাকে হত্যা, গ্রেপ্তার যুবক
নিছক চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় চোরকে চিনে ফেলায় প্রকাশ্যে নিজ বাড়ির বেডরুমে দেলোয়ারা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধাকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু নামে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর হত্যার দায় স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন গ্রেপ্তার যুবক।
গ্রেপ্তার রিজুর দেওয়া তথ্য মতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি, লুণ্ঠিত স্বর্ণের কানের দুল ও নাকফুল, নিহতের মোবাইলফোন উদ্ধার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এই তথ্য জনিয়েছেন নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু চিনিশপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাইনুদ্দিন মিয়ার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, গত ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশে উপজেলার চরনগরদী গ্রামে নিজ বাড়িতে খুন হয় দেলোয়ারা বেগম (৬০)। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ অজ্ঞাত আসামি করে পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার রহস্য উন্মোচনে ডিবির অফিসার্স ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে মঞ্জুরুল ইসলাম রিজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সে হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে সকল তথ্য উপস্থাপন করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি, লুণ্ঠিত স্বর্ণের কানের দুল, নাকফুল ও নিহতের মোবাইলফোন উদ্ধার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত দোলোয়ারা বেগম এর দুই ছেলে প্রবাসী। তিনি বাড়িতে একা বসবাস করতেন। গ্রেপ্তারকৃত রিজুর ধারণা, নিহত দেলোয়ারা বেগমের বাড়িতে অনেক টাকা পয়সা থাকবে। এমন ধারণা থেকেই সে তার বাড়িতে যায়। পরে তার কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। তখন নিহত দেলোয়ার তাকে চিনে ফেলেন। পরে রিজু তাকে গলা চেপে ধরেন। এসময় বৃদ্ধা দেলোয়ারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর দেলোয়ারা তার ছেলে সহ অন্যান্যদের বলে দিতে পারে নিছক এই ভয় থেকে তার ঘরে থাকা বটি দিয়ে দেলোয়ারাকে জবাই করে হত্যা করে। পরে দোলোয়ারার শরীরে থাকা স্বর্ণের কানের দুল, নাকফুল ও মোবাইলফোন নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) খোকন চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু তার আপন দাদিকে জবাই করে হত্যা করে। এই মামলায় রিজু জেলে ছিলেন। জেলে থাকার সময় নিহতের ছেলে জাকির এর সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। সেই সুবাদে তাদের বাড়ির সবকিছু রিজু জানতো। গত কয়েকদিন আগে সে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পায়। চুরি করতে গিয়ে নিহত দেলোয়ারা চিনে ফেলায় তাকে খুন করে রিজু।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) অনির্বাণ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সামসুল আরিফিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শফিকুল ইমসলাম সোহাগ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার্স ইনর্চাজ খোকন চন্দ্র সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।