জাবিতে ছাত্রদল নেতাকে বেধড়ক পিটুনি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রদল নেতাকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার রাতে উপাচার্য ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি ও বাংলা বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খলিল বিপ্লব পরীক্ষার নোট সংগ্রহ করতে ক্যাম্পাসে যান। এ সময় ছাত্রলীগের উপ-মানববিষয়ক সম্পাদক ফিরোজুর রহমান সবুজ, সহসম্পাদক মেহেদী হাসান রোমান ও কার্যকরী সদস্য ইবনে সউদ মিশুর নেতৃত্বে মো. উজ্জ্বল হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, ইমরান, রোকন, আরিফ, জুবায়েরসহ ১৫-২০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাঁকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। তবে আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে ইব্রাহীম খলিলের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।
মারধরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজুর রহমান সবুজ বলেন, ‘মারধরের সময় আমি সেখানে ছিলাম না। সে ভিসি ম্যামের বাসার সামনে ছাত্রদলের কয়েকজনসহ নাশকতা করার পরিকল্পনা করছিল। পরে আমাদের কয়েকজন মোটরসাইকেলের তেল ঢোকানোর জন্য বিশমাইল গেটের দিকে যাওয়ার সময় তাদের জটলা পাকাতে দেখে। এ সময় তাকে ওরা মারধর করেছে।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘ছাত্রলীগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে নাশকতা করার জন্য ছাত্রদল তৎপরতা চালাচ্ছিল। বিষয়টি আঁচ করে নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করেছে।’
তবে সহকারী প্রক্টর ড. মো. শরিফ হোসেন বলেন, কে বা কারা তাঁকে মেরেছে, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা সবাই মাওলানা ভাসানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দের অনুসারী বলে জানা গেছে।
সক্রিয় হিসেবে কেন্দ্রের মনোযোগ আকর্ষণ করতে বিভিন্ন সময় ছাত্রদল সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া প্রশাসনের একটি অংশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে মোর্শেদ ও তাঁর অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে চান বলে দাবি করছে খোদ ছাত্রলীগেরই একটি অংশ। মোর্শেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে চান বলে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম সৈকত বলেন, এখন থেকে যেখানেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পাওয়া যাবে, সেখানেই গণধোলাই দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত এর বিচার না করলে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর ড. মো. শরিফ হোসেন বলেন, ‘তার অবস্থা গুরতর দেখে তাকে আমরা এনাম মেডিকেল পাঠিয়েছি। তাকে কে বা কারা মেরেছে, এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। পরে খোঁজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’