নারী ও পিছিয়ে থাকাদের কর্মসংস্থানে কাজ করছি : এনআরবিসির চেয়ারম্যান
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এনআরবিসি ব্যাংকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। এতে সাধারণ মানুষ বাড়ির কাছেই এনআরবিসি ব্যাংকের সেবা পাচ্ছে। নারী ও প্রশিক্ষিত যুব সমাজের অন্যান্য পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির ১১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সভাপতিত্ব বক্তব্যে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। এদিন ১১তম এজিএম সম্পন্ন করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান এনআরবিসি ব্যাংক। শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির মধ্য দিয়ে ডিজিটাল প্লাটফর্মে এই এজিএম অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে ২০২৩ সমাপ্ত বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সহ মোট ছয়টি এজেন্ডা অনুমোদন হয়। অন্য এজেন্ডাগুলো হলো— আলোচিত সমাপ্ত বছরের আর্থিক বিবরণী অনুমোদন, পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয়ন ও নির্বাচন, নিরীক্ষক পুনর্নিয়োগ ও সম্মানি এজেন্ডা শেয়ারহোল্ডাররা অনুমোদন করেন।
এজিএম সভায় চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করছে। এক্ষেত্রে নারী ও প্রশিক্ষিত যুব সমাজের অন্যান্য পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষিত যুবাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে বিনা জামানতে সহজশর্তে ঋণ দিচ্ছে। শহরমুখী কমাতে ও মহাজনী সুদ থেকে মুক্তি দিতে ক্ষুদ্রঋণের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এনআরবিসি ব্যাংকের প্রশংসিত এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এনআরবিসি ব্যাংকের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। ফলে সাধারণ মানুষ বাড়ির কাছেই ব্যাংকের সেবা পাচ্ছে। আবার প্লানেট অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই ‘রিয়েল টাইম ব্যাংকিং’ করতে পারছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের চাহিদার উপরভিত্তি করে ব্যাংক সেবা সাজিয়ে থাকে।
সমসাময়িক ব্যাংকগুলোর তুলনায় সকল আর্থিক সূচকে এগিয়ে আছে এনআরবিসি ব্যাংক জানিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) মো: রবিউল ইসলাম বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নই ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য অধিকাংশ শাখা-উপশাখা এবং অন্যান্য সেবাকেন্দ্র। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহক সেবা দিয়ে থাকে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ডিজিটাল প্লাটফর্মের এই এজিএমে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম, এ এম সাইদুর রহমান, মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, আবু বকর চৌধুরী, লকিয়ত উল্লাহ, মোহাম্মদ নাজিম, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ড. রাদ মজিব লালন, ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশিদ, কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আহসান হাবিব সহ শেয়ারহোল্ডাররা।
সবশেষ সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন মতে, এনআরবিসি ব্যাংকের আমানত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৬ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ। সমাপ্ত বছর শেষে পরিচালন মুনাফা ৩৫৬ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা হয়েছে ১৮৫ কোটি টাকা। শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৩ পয়সা।
গত বছর ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা, রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ১৯২ কোটি টাকা ও রেমিটেন্স এসেছে ৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।