কর বৃদ্ধির অর্থবিল প্রত্যাহার করেছেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বলেছেন, তিনি সেই অর্থ বিলে স্বাক্ষর করবেন না; যেটির কারণে দেশের জনগণকে উচ্চ কর দিতে হতো। করবিরোধী বিক্ষোভকারীদের পার্লামেন্টে হামলায় পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনার পর আজ বুধবার (২৬ জুন) দেশটির টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে রুটো এ ঘোষণা দেন। খবর আল-জাজিরার।
বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নিয়ে রুটো বলেন, ‘আমি ২০২৪ সালের অর্থবিলে সই করব না। বিলটি প্রত্যাহার করা হবে।’ রুটো বলেছেন, দেশটির তরুণ জনতার সঙ্গে তিনি বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করবেন। বাজেটে কাটছাটের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করবেন। যাতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করা যায়।
প্রেসিডেন্ট রুটোর এই পদক্ষেপটি সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনকারীদের জন্য একটি বড় বিজয়। প্রস্তাবিত উচ্চ করের প্রতিবাদে দেশটিতে অনলাইনে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ ও সংসদে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশ চালানোর দুই বছর হলেও এটিই রুটোর কাছে সবচেয়ে গুরুতর সংকট ও রাজনৈতিক নিন্দা ছিল।
রুটোর বক্তব্যের কিছুক্ষণ আগেই আজ আন্দোলনকারীরা কেনিয়ায় নতুন করে আরেকটি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। গতকালের আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের সম্মান জানাতে শান্তিপূর্ণভাবে জড়ো হতে বলা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট রুটোর উদ্দেশে যুব-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সংগঠক হানিফা আদান তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের সবাইকে হত্যা করতে পারবেন না। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আমরা সাদা পোশাক পরিধান করে আবারও শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করব। আপনি এটি ভুলতে পারবেন না।’
গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, কেনিয়ার পার্লামেন্টে কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে যখন ভোটাভুটি চলছিল, ঠিক সে সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পার্লামেন্ট সংলগ্ন এলাকা। কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে জনতা। পর্লামেন্টের একপাশে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। তা থামাতে বিক্ষুব্ধদের ওপর টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ, এমনকি চালায় গুলিও। এতে অনেকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ১০টি পশ্চিমা দেশ।
কেনিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং অ্যামনেস্টি কেনিয়া অন্তর্ভুক্ত এনজিওগুলোর বিবৃতির বরাতে এ তথ্য জানায় এএফপি। বলা হয়েছে, ১০টিরও বেশি পশ্চিমা দেশ কেনিয়ায় সহিংসতায় ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছে। কানাডা, জার্মানি, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩টি দেশের দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশন যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘কেনিয়ার পার্লামেন্টের বাইরের দৃশ্য দেখে হতবাক।’