গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণ এরপর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে না পেয়ে এক ব্যক্তিকে খুন করেছে প্রতিবেশী এক বন্ধু। ঘটনার প্রায় চার মাস পর আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) অপহৃত ওই ব্যক্তির বস্তাবন্দি মরদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় দড়িপাড়া গ্রামের রেললাইনের পাশের ডোবা থেকে এ কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যে এ কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

নিহত রেক্সি বাবু রোজারিও (৪৩) কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের মুকুল রোজারিওর ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত যুবক লিংকন জন রোজারিও (৩৮) একই গ্রামের মৃত লিও রোজারিওর ছেলে।

নিহত বাবুর বাবা মুকুল রোজারিও জানান, গত ১০ জুলাই দুপুরে প্রতিবেশী লিংকন জন রোজারিও তাঁর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রেক্সি বাবু রোজারিওকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা রেক্সি বাবু রোজারিওকে অপহরণের কথা জানিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পরিবারের কাছে ছেলের মোবাইল ফোন থেকে ফোন করে। এ সময় অপহরণকারীরা রেক্সি বাবুকে জীবিত পেতে হলে মুক্তিপণের ওই টাকা গাজীপুর শালবনে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এদিকে ওই দিন গভীর রাতেও ছেলে বাড়ি ফিরে না আসায় সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করে স্বজনরা। কিন্তু সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতেই কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, রেক্সি বাবু রোজারিও অপহরণের ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের একাধিক টিম নানা প্রযুক্তি ও কৌশলে তদন্তে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে এ ঘটনায় জড়িত লিংকন জন রোজারিওকে আজ (শুক্রবার) ভোরে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মাছের ঘের থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ওই মাছের ঘেরে ছদ্মনাম (শাকিল) পরিচয় দিয়ে চাকরি নিয়েছিলেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের ঢাকা-ভৈরব রেললাইনের পাশের একটি ডোবা থেকে অপহৃত রেক্সি বাবু রোজারিওর গলিত মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর কোমরে রশি বাঁধা ছিল। তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তর করা লিংকন জন রোজারিও জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

মরদেহ উদ্ধারের সময় গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, কালীগঞ্জ থানার ওসি আলাউদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিউল্লাহ, ডিবি পুলিশের এসআই মিজানসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।