সেরাতে থেকেও অগ্নির মূলধন কমে ৫০ কোটি টাকা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইটি খাতের কোম্পানি অগ্নি সিস্টেমসের ৭৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার)। যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ১৭ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক সপ্তাহটিতে শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ছয় টাকা ৯০ পয়সা। যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন কমেছে ৫০ কোটি ছয় লাখ টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অগ্নি সিস্টেমসের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৮০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহের ১৪ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৩২ টাকা ৭০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ছয় টাকা ৯০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট শেয়ারের মাধ্যমে ডিএসইর বাজারে মূলধন কমেছে ৫০ কোটি ছয় লাখ ৩৭ হাজার ৭২৫ টাকা।
গেল সপ্তাহটিতে ৪১৩টি কোম্পানির দুই হাজার ৭৭০ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার অডিটেড সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। মানে পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যতো বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা ততো বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, অগ্নি সিস্টেমসের গত অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩২ পয়সা। গত তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৯০ পয়সা। আলোচিত তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে এক টাকা ১৫ পয়সা। গত ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা। এর আগের ২০২২-২০২৩ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-মার্চ) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য চার দশমিক ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল এক টাকা ১৩ পয়সা। সমাপ্ত বছরে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল এক টাকা ৩৮ পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১৫ টাকা ৯৫ পয়সা।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অগ্নি সিস্টেমস। ‘বি’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৭২ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা সাত কোটি ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৯২টি। রিজার্ভে রয়েছে ১৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। যা ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার ছিল। ২০২৩ সালের ৩০ জুনে কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ রয়েছে এক কোটি ৬৮ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৭২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।