শ্বশুরের পর স্বামী খুন, সন্তান নিয়ে ভিটে ছাড়া রোজিনা
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা এলাকায় শিশু সন্তানদের সামনে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয় জহিরুল নামের এক দিনমজুরকে। হত্যার পর নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু আসামিদের ধরতে পারছে না পুলিশ। আসামিদের হুমকিতে শিশু দুই সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রোজিনা। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
রোজিনা আজ রোববার নরসিংদী প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের জানান, তাঁর শ্বশুরবাড়ি পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামে। জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শত্রুতার জের ধরে গত ১৪ এপ্রিল সন্ত্রাসীরা তাঁর স্বামীকে দুই সন্তানের সামনে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। ঢাকায় অবস্থানরত কোটিপতি এক গডফাদারের ইশারায় ছয় বছর আগে একই সন্ত্রাসীরা তাঁর স্বামীর চোখের সামনে শ্বশুর সামছুল হককে গলা কেটে হত্যা করে। তখন তাঁর শাশুড়ি নূর জাহান বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দুই বছর আগে তাঁর শাশুড়ি মারা গেলে সেই মামলার বাদী হন তাঁর স্বামী জহিরুল হক। বর্তমানে মামলাটি নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামিরা তাঁর স্বামীকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছিল। তাঁকেও শ্বশুরের মতো হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। তখন ওই ঘটনা পুলিশকে জানিয়েও স্বামীকে রক্ষা করতে পারেননি বলে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন রোজিনা।
গত ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা দুই সন্তানের চোখের সামনে জহিরুলকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা করে দুই শিশু সন্তান নিয়ে বড় অসহায় ও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলে রোজিনা আর্তনাদ করেন। মামলা তুলে না নিলে তারা দুই শিশু সন্তানকেও হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তাই ভয়ে নিজ স্বামী-শ্বশুরের ভিটে ছেড়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
রোজিনা বলেন, মামলায় আসামিদের নাম উল্লেখ করলেও পুলিশ এখনো একজন আসামিকেও আটক করতে পারছে না। যার কারণে সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মামলা করার পর থেকে আসামিরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ সার্বক্ষণিক তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়া বাদীর নিরাপত্তায় আমাদের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।’