পরনারীর সঙ্গে সেলফি, পাকিস্তানে মুফতি বরখাস্ত
পাকিস্তানে পরনারীর সঙ্গে ছবি তোলায় উচ্চপদস্থ এক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ‘মুফতিকে’ বরখাস্ত করা হয়েছে। দেশটির ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাতে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ কথা জানায়।
সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, উচ্চপদস্থ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মুফতি আবদুল কাভিকে বিতর্কিত এই আচরণের জন্য কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির নৈতিকতা বিষয়ক কমিটি।
এদিকে পাকিস্তানের খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যম ডন অনলাইন জানিয়েছে, ‘আবেদনময়ী’ মডেল কান্দিল বালুচের সঙ্গে সেলফি তোলার অপরাধে মুফতি কাভিকে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক আদেশে মুফতি কাভিকে পাকিস্তানের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি থেকে ছাঁটাই করা করা হয়।
সংবাদমাধ্যমটি আরো জানায়, কঠোর রক্ষণশীল মুসলিম দেশ পাকিস্তানে কান্দিল বালুচ একজন বিতর্কিত মডেল হিসেবেই পরিচিত। এর আগে একাধিকবার এই অভিনেত্রী নগ্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তান জিতলে আফ্রিদির জন্য তিনি নগ্ন হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এর এক মাস পরেই ভারতের ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলির জন্য ‘সব করতে পারেন’ বলে ঘোষণা দিয়ে তীব্র সমালোচিত হন তিনি। ওই সময়ে পাকিস্তানে তাঁর কুশপুতুল পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছিল।
এ ছাড়া ইউটিউবে নানা সময়ে বিতর্কিত ‘অর্ধনগ্ন’ ভিডিও পোস্ট করে আলোচনা এবং সমালোচনা শিকার হয়েছিলেন কান্দিল বালুচ।
গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম হিসেবে পরিচিত মুফতি কাভি ও কান্দিলের কিছু ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হয়। ছবিতে মোবাইল ফোনে আলাপরত মুফতি কাভির সঙ্গে তাঁরই টুপি মাথায় দিয়ে উত্তেজক মুখভঙ্গিরত কান্দিলকে দেখা যায়।
আর কান্দিলের ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওতে মুফতি কাভিকে বলতে দেখা গেছে, তিনি এই বিতর্কিত মডেলকে ধর্মীয় বিষয়ে পথ দেখাবেন এবং কান্দিল তাঁর ছাত্রী হতে রাজি হয়েছেন। এ ছাড়া কান্দিলই এই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন বলে জানায় পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো।
এদিকে বিতর্কিত ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুফতি কাভিকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা ও উপহাস শুরু হয়। এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মুফতি কাভিকে ‘ইসলামের কলঙ্ক’ হিসেবে বর্ণনা করেন মডেল কান্দিল। তিনি খ্যাতনামা এই আলেমকে অসংলগ্ন আচরণের জন্যও অভিযুক্ত করেন।
মুফতি কাভি জানান, বিতর্কিত মডেলের অনুরোধেই তিনি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ ছাড়া ভিডিও ও ছবি প্রকাশের মাধ্যমে যে বিড়ম্বনার সৃষ্টি করেছেন, তার জন্য মডেল ক্ষমা চেয়েছেন বলেও দাবি তাঁর।
তবে মডেল কান্দিলের দাবি, একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেখা হলে তাঁর ফোন নম্বর চান ওই মুফতি। পরে তিনি অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করেন। এরপর আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলন করে মুফতি কাভি তাঁকে জীবননাশের হুমকি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন কান্দিল।
অবশ্য এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তানে সমালোচিত ছিলেন মুফতি কাভি। সর্বশেষ চলতি বছরের শুরুতে বিতর্কের মুখে মুফতি কাভিকে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিকে ইনসাফ দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল।