দিনাজপুরে নিহতদের দুজন নাটোরের যুবলীগকর্মী
দিনাজপুরে নিহত নাটোরের তিন যুবকের দুজন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অন্যজন তাঁদের বন্ধু ও স্থানীয় একটি অনলাইনের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।
গত ৩ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার তকিয়া বাজার থেকে র্যাব পরিচয়ে ওই তিনজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত একজনের মা একটি সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) এই অভিযোগ করেছেন।
আজ সোমবার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ কলাবাড়ি মাদ্রাসার পুলিশ বক্সের পাশ থেকে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন নাটোর শহরের কানাইখালী মহল্লার বাসিন্দা পৌর যুবলীগের সদস্য রেদোয়ান সাব্বির (৩৭) ও কালুর মোড় এলাকার বাসিন্দা পৌর যুবলীগের কর্মী সোহেল রানা (৩৮) এবং তাঁদের বন্ধু কানাইখালী মহল্লার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আকন্দ (৩৮)।
এদিকে আজ দুপুরে নাটোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পৌর যুবলীগের সদস্য সাব্বিরসহ তিনজনকে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে জেলা যুবলীগ। সংবাদ সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব জানান, নিহত সাব্বির পৌর যুবলীগের সদস্য এবং সোহেল একই শাখার কর্মী। তবে আবদুল্লাহ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। আবদুল্লাহ একসময় স্থানীয় একটি অনলাইন সংবাদপত্রের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।
ওই তিনজনকে ‘যারা তুলে নিয়ে গেছে’ তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান যুবলীগ নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন সদর থানা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক ডাবলু ও পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক সাইম হোসেন উজ্জ্বল।
এদিকে সাব্বিরের মা রুখসানা বেওয়া গতকাল রোববার রাতে তাঁর ছেলেসহ তিনজনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় নাটোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডিতে তিনি জানান, ৩ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার তকিয়া বাজার থেকে র্যাব পরিচয়ে ওই তিনজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রুখসানা বেওয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলের যদি কোনো অপরাধ থাকত তার বিচার করত। কারা তাকে এভাবে হত্যা করল আমি বিচার চাই।’
সাব্বিরের বোন সুরভী জানান, স্থানীয় লোকদের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পেরেছেন গত ৩ ডিসেম্বর রাতে র্যাব পরিচয়ে তাঁর ভাইসহ একসঙ্গে তিনজনকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে নাটোরে দায়িত্বরত র্যাব ৫-এর কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানতে চাইলে তাঁরা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, নিহত সাব্বিরের বিরুদ্ধে ১০টি ও সোহেলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে। তবে আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
ওসি জানান, তিনজন নিখোঁজ হওয়ার পর একজনের মা একটি জিডি করেছিলেন। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, র্যাব পরিচয়ে তিনজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।