সীমান্তে যুবক নিহত, নেপালে বিক্ষোভ, ভারতের দুঃখপ্রকাশ
হাজারো মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় বিদায় নিয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত নেপালি যুবক গোবিন্দ গৌতম (২৯)। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্যানুষ্ঠান হয়েছে।
গুলির ঘটনায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় বাহিনী সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) গুলিতে নিহত হন গৌতম। আজ ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকা নেপালের কাঞ্চনপুরের দোবা নদীর তীরে গৌতমের শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গৌতমকে কেবল বিদায় নয়, তাঁকে ‘শহিদ’ উপাধি দিয়েছে নেপাল সরকার।
দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, গৌতমের বাবা ক্ষেমলাল গৌতম (৭২) নিজ ছেলের মুখাগ্নি করেন। এ সময় গৌতমের স্মরণে ১১ বার আকাশে গুলি করে নেপালি পুলিশ।
যা ঘটেছিল গৌতমের ভাগ্যে
ভারতীয় সীমান্ত এলাকা কাঞ্চননগর জেলায় ঘটনাটি ঘটে। জেলার পুনার্ভার কারগিলডান্ডা এলাকাটি একেবারেই সীমান্তে। সেখানে কালভার্ট নির্মাণের আয়োজন করে ভারত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ কালভার্ট নির্মাণের তোড়জোড় করছে ভারত। কাঞ্চননগর জেলা কর্মকর্তা মনোহর প্রসাব খানাল জানান, এরই প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা সীমান্ত এলাকায় জড়ো হয় এবং প্রতিবাদ করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারতের বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) নেপালের ৮০০ মিটার এলাকার ভেতরে প্রবেশ করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তখনই গুলি করে এসএসবি আর এতে গুলিবিদ্ধ হন যুবক গৌতম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৌতমকে কৈলালি জেলার সেতি জোনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নেপালের বিভিন্ন এলাকা। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষ এ হত্যা প্রতিবাদ জানায়। কাঠমান্ডুতে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে প্রতিবাদ করে তারা।
ভারতের অস্বীকার ও পরে তদন্তের সিদ্ধান্ত
ঘটনার পরই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে ভারত। ভারতের দাবি, এসএসবির গুলিতে কোনো হত্যার ঘটনা ঘটেনি। কাঠমান্ডুতে ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গুলিবর্ষণের কোনো ঘটনার সঙ্গে এসএসবি জড়িত নয়।
ঘটনার পরদিন ভারত জানায়, ওই ব্যাপারে এসএসবিও তদন্ত শুরু করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে জানান, নিহতের ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে নেপালের কাছে।
এ বিষয়ে নেপাল সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি বিষয়টি নিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন। নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন দোভাল। নিহতের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং ওই বিষয়ে তদন্তের জন্য নেপাল সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন দোভাল।