সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ক্ষেপেছে রাশিয়া
সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপরে ‘রাসায়নিক হামলা’ চালানোর জবাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদ নিয়ন্ত্রিত বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলায় বেশ ক্ষেপেছে সিরিয়া-ঘনিষ্ঠ রাশিয়া।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সিরিয়ার হোমস প্রদেশে অবস্থিত শাইরাত সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলায় ছয় সেনা ও নয়জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে সিরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে দাবি করা হয়েছে।
ওই হামলার ঘণ্টাখানেক পরই সিরিয়ার ‘আকাশে সংঘর্ষের’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি প্রত্যাহার করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘অভিযান চালানোর সময় সিরিয়ার আকাশে যুদ্ধবিমানের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলাকে ‘একটি সার্বভৌম দেশের ওপর আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এতে ‘আন্তর্জাতিক রীতির’ লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হবে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এ ছাড়া এ বিষয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠক ডাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ঘাঁটি লক্ষ্য করে অন্তত ৬০টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে ২৯টি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সিরিয়ার যেসব বিমানঘাঁটি থেকে রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে, সেখানে বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক নিরাপত্তার জন্যই জীবনঘাতী রাসায়নিক অস্ত্রের বিস্তার বন্ধ করতে হবে।’
হামলার আগে আসাদ সরকারের সহযোগী রাশিয়া ও তুরস্ককে এ বিষয়ে জানানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন।
এর আগে রাসায়নিক হামলার পর পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া-বিষয়ক তাঁর ‘কৌশল’ পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ হামলা সিরিয়ার নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে হামলা। এটা নিন্দনীয়। সভ্য বিশ্বের বাসিন্দারা এটা এড়িয়ে যেতে পারেন না।
সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়ান মার্ক এ বৈঠক ডাকেন। পাশাপাশি ওই হামলাকে ঘৃণ্য বলে উল্লেখ করেন বিশ্ব নেতারা।
যদিও গোড়া থেকেই এ ধরনের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে সিরিয়ার আসাদ সরকার।