চিকুনগুনিয়ার ব্যথায় করণীয়
চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এটি এডিস মশার (এডিস এজিপ্টি ও এডিস অ্যালব্টিকাস ) কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। সম্প্রতি এই রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় এর প্রার্দুভাব বেশি। এই রোগের প্রধান উপসর্গ হলো প্রচণ্ড জ্বর। এটি ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাশাপাশি শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা থাকে। বিশেষ করে হাত ও পায়ের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হয়।
এই জ্বরের তীব্রতা তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যে কমে গেলেও ব্যথায় কষ্ট পান আক্রান্ত রোগীরা। এই ব্যথা দেড় থেকে দুই মাস পর্য়ন্ত স্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে প্রবীণ ব্যক্তিরা জ্বর পরবর্তী আথ্রাইটিস বা জয়েন্টের প্রদাহজনিত সমস্যায় ভুগেন। একই সঙ্গে হাত ও পায়ের অনেক জয়েন্টে ব্যথা হওয়ায় এই অবস্থাকে মেডিকেল পরিভাষায় পলিআথ্রাইটিস বলা হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীর হাত ও পায়ের আক্রান্ত জয়েন্টগুলো ফুলে যায়, নাড়াতে কষ্ট হয়,সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক কষ্ট হয়। এই ধরনের উপসর্গ আরো কয়েক ধরনের আথ্রাইটিসে দেখা যায়। যেমন - রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, জুভেনাইল আথ্রাইটিস, অস্টিওআথ্রাইটিস ইত্যাদি। তবে এ ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগের ইতিহাস, ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশন, প্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে থাকেন।
করণীয়
১. আক্রান্ত জয়েন্টে বরফ দিয়ে স্যাঁক দিতে পারেন। তোয়ালে বা সুতি কাপড়ের মধ্যে বরফ নিয়ে আক্রান্ত স্থানে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট, দিনে দুই থেকে তিন বার ঠান্ডা স্যাঁক দিতে পারেন। এতে প্রদাহ কমে ব্যথা কমে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সরাসরি বরফ যেন চামড়ায় লাগানো না হয়। সেক্ষেত্রে ফ্রস্ট বাইট বা আইস বার্ন হতে পারে।
২. যেহেতু জ্বরের কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়, তাই প্রচুর পরিমাণে ওরস্যালাইন, ডাবের পানি ও তরল খাবার খেতে হবে।
৩. এই ধরনের জ্বরে ব্যথা কমানোর জন্য প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রোগীর বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন রকম চিকিৎসা নির্ধারণ করে থাকেন । যেমন-ইলেকট্রোথেরাপি, ওয়াক্স বাথ থেরাপি ইত্যাদি।
৪. আপনার বাসার আশপাশ পরিষ্কার রাখুন যেন মশা বংশবিস্তার করতে না পারে। রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমান।
লেখক : চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালটেন্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমণ্ডি,ঢাকা।