আলু যেভাবে খাবেন
আপনি কি সবজি খান? প্রশ্ন করলে অনেকেই উত্তরে বলেন, ‘ আলু খাই’। যদিও আলু সবজি নয়। সবজি ভেবে অনেক মানুষই ছোটবেলা থেকে আলু খায়। আলু মূলত শ্বেতসার। আলুতে রয়েছে প্রচুর কার্বহাইড্রেট ও ক্যালরি। এই দুই পুষ্টি উপাদান ছাড়াও আলুতে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, কপার ইত্যাদি।
আলুর ভিটামিন ও মিনারেল শরীরের জন্য অনেক ভালো। ভাত ও আলু শ্বেতসার জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম। ভাতের সঙ্গে আলু খেলে অতিরিক্ত কার্বহাইড্রেট গ্রহণ করা হয়। তাই বেশি আলু খেলে ওজন বেড়ে যাওয়া বা রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কারণ, এতে প্রচুর ক্যালরি ও কার্বহাইড্রেট রয়েছে। আলু বেশি খেলে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তাই ভাতের সঙ্গে আলুকে আমরা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেই।
তাই বলে একেবারেই আলু খাবেন না? চলুন জেনে নেই কীভাবে আলু খেলে তাতে ক্ষতি কিছুটা কমানো যাবে।
১. মাংস দিয়ে আলু না খেয়ে মাছ দিয়ে আলু খেলে কিছুটা ক্যালরি কমবে। কারণ মাছে, মাংসের চেয়ে কম ক্যালোরি।
২. আলু খেলে ভাত একটু কম খাবেন। এক টুকরা মাঝারি আলু খেলে, এক কাপ ভাত কম খাবেন।
৩. মিষ্টি আলুতে প্রচুর ভিটামিন, তাই বিকেলে ভাজা পোড়া না খেয়ে একটি মিষ্টি আলু খান।
৪. আলু ডুবো তেলে ভেজে না খেয়ে, গ্রিল করে খেলে ভালো।
৫. ক্যালরি কম গ্রহণ করতে হলে, রাতে ভাত না খেয়ে মাছ বা মুরগির মাংসের সঙ্গে কার্বহাইড্রেট হিসেবে আলু উপভোগ করুন। আলুতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ভাতে বা রুটিতে নেই।
৬. নিরামিষ বা মিক্স সবজি রান্নায় অনান্য সবজির সঙ্গে অল্প আলু দিবেন। এর অনুপাত হবে ১০ : ১ অনুপাত।
৭. আলু ভাজা বা আলু ভাজির চেয়ে আলু দিয়ে স্বাস্হ্যকর নাস্তা তৈরি করে আলু উপভোগ করতে পারেন। যেমন, আলু ও টকদই এর চাট, সবজি ও আলুর চপ, আলু ডাল, কিমা আলু বা মাছ আলুর কাটলেট ইত্যাদি। অর্থাৎ আলুর সঙ্গে প্রোটিনের সমন্বয়ে তৈরি খাবার খাবেন ‘মিল’ হিসেবে।
৮. আলু ভাজি দিয়ে রুটি খেলে, রুটির পরিমাণ কম খাবেন।
৯. আলুর ভিতর কিমা বা মাছের পুর না দিয়ে আলুকেই পুর করে মাছের বা কিমার চপ তৈরি করুন।
১০. আলু থেকে ক্যালরি বেশি আসে বলে, আলুর সঙ্গে তেল বা ঘি জাতীয় উপাদানের ব্যবহার হতে বিরত থাকুন। যেমন আলু ভর্তায় ঘি না দিয়ে সরিষার তেল দিন।
ওপরের পরামর্শগুলো মেনে মাঝেমধ্যে আলু খেলে তাতে ক্ষতি হয়তো কিছুটা কম হবে। কিন্তু মনে রাখবেন এই টিপস প্রতিদিনের জন্য নয়। সপ্তাহে একবার এমন করে আলু খাওয়া যেতে পারে। আলু একটু খেয়ে নিলে ৩০ মিনিট হাটুন বা অনান্য কার্বহাইড্রেট কম গ্রহণ করুন।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল