চিকেন ফ্রাই খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানেন?
এটি এমন একটি মজার খাবার, যা ছোট-বড় সবাই পছন্দ করে। তবে চিকেন ফ্রাইয়ে প্রচুর ক্যালোরি, প্রোটিন ও চর্বি থাকে। ট্রান্সফ্যাট থাকার কারণে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মচমচে আবার ভিতরে নরম, ঝাল স্বাদের এই খাবারে থাকে প্রচুর তেল। তাই স্বাস্থ্য বিবেচনায় চিকেন ফ্রাইকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। চিকেন ফ্রাই খেলে এসিডিটি, উচ্চরক্তচাপ, ওজন বেড়ে যাওয়া, রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
তাই বলে কি একেবারেই চিকেন ফ্রাই খাবেন না? চলুন জেনে নিই কীভাবে এটি খেলে ক্ষতি কিছুটা কমানো যাবে।
১. খালি পেটে কোনোভাবেই চিকেন ফ্রাই খাবেন না।
২. হাড় ছাড়া চিকেন ফ্রাইতে তুলনামূলকভাবে চর্বি কম থাকে। বুকের মাংসের টুকরা সবচেয়ে ভালো। তাই এ ধরনের চিকেন ফ্রাই খান।
৩. থালায় চিকেন ফ্রাই নিয়ে আস্তে আস্তে আঙুল দিয়ে ভেঙে খান অথবা ছুড়ি দিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে কেটে আস্তে আস্তে খান। এতে কম খাওয়া হয়, একটাতেই পেট ভরে যায়।
৪. ঘরের তৈরি চিকেন ফ্রাইয়ের তুলনায় বাইরের চিকেন ফ্রাইয়ে বেশি ক্যালরি, ফ্যাট ও অনান্য ক্ষতিকর উপাদান থাকে। তাই বাইরের চেয়ে ঘরের তৈরি চিকেন ফ্রাই তুলনামূলকভাবে ভালো।
৫. চিকেন ফ্রাইয়ে প্রচুর ক্যালরি থাকে। তাই সস বা কোলস্লো(coleslaw) দিয়ে খেয়ে, ক্যালরি না বাড়িয়ে, শশা বা গাজর স্লাইস দিয়ে খেলে কিছুটা উপকার হবে।
৬. হাড়যুক্ত মাংসের চিকেন ফ্রাইয়ের চেয়ে বোনলেস (boneless) চিকেন ফ্রাইতে তুলনামূলকভাবে কম চর্বি থাকে।
৭. চিকেন ফ্রাই খেয়ে, কোল্ড ড্রিংক খাবেন না।
৮. চিকেন ফ্রাই খাওয়ার আগে পানি পান করুন।
৯. তেলে ভাজা চিকেন ফ্রাইয়ের পরিবর্তে বেকড (baked) বা গ্রিল চিকেন ভালো। এটি স্বাদে কিছুটা ভিন্ন হলেও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
১০. বড় চিকেন ফ্রাই না খেয়ে ছোট ছোট টুকরা করা চিকেন ফ্রাই খান। এটি সব দিক থেকেই আপনাকে রক্ষা করবে।
১১. দোকানের চিকেন ফ্রাইয়ে মোটা পুর থাকে। তাই ওপরের মচমচা অংশ ফেলে নিলে কিছু তেল বা চর্বি ও ক্যালরি কমানো যেতে পারে।
১২. ঘরের চিকেন ফ্রাই পাতলা পুর দিয়ে তৈরি করা যায়। এটি কিছুটা স্বাস্থ্য সম্মত।
১৩. চিকেন ফ্রাই মিল হিসেবে দুপুরবেলা বা রাতে খেলে দৈনিক ক্যালরির কিছুটা ভারসাম্য হয়।
১৪. যেসব বাচ্চা চিকেন ফ্রাই ছাড়া খেতে চায় না, তাদের সাদা ভাতের সঙ্গে চিকেন ফ্রাই দিলে ক্যালরি ও চর্বি অনেক কমানো যায়। এতে বাচ্চাদের মোটা হয়ে যাওয়াকে অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়।
১৫. চিকেন ফ্রাই তৈরিতে টেস্টিং সল্ট, লাল মরিচ, রঙিন কেনা ব্রেড ক্র্যাম ইত্যাদি না ব্যবহার করাই ভালো।
১৬. চিকেন ফ্রাইয়ের সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাবেন না। এতে প্রচুর ক্যালরি গ্রহণ করা হয়। বরং চিকেন ফ্রাইয়ের সঙ্গে এক স্লাইস ব্রেড টোস্ট করে, সঙ্গে সালাদ খেলে ভালো।
ওপরের পরামর্শগুলো মেনে চিকেন ফ্রাই খেলে, তাতে ক্ষতি হয়তো কিছুটা কমবে, তবে মনে রাখবেন এই পরামর্শ প্রতিদিনের জন্য নয়। মাসে দুই বা একবার এমন করে চিকেন ফ্রাই খাওয়া যেতে পারে। যারা প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে খেতে যান, তারা একটি চিকেন ফ্রাই দুজন মিলে ভাগ করে খাবেন। এতে কিছু ক্যালোরি কমে যাবে।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ অ্যাপোলো হাসপাতাল