কোল্ড ড্রিংক যেভাবে পানে ক্ষতি কিছুটা কম
কোল্ড ড্রিংক পান করতে পছন্দ করেন অনেকেই। চিনিই হলো এর মূল উপাদান। তাই কোল্ড ড্রিংকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে। বাইকার্বোনেটেড হিসেবে পরিচিত এই তরল কখনই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে যাঁরা প্রতিনিয়ত পান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে।
অতিরিক্ত কোল্ড ড্রিংক খেলে ওজন বেড়ে যাওয়া বা রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কারণ, এতে প্রচুর সুগার ও ক্যালরি রয়েছে। এ ছাড়া বেশি খেলে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, ঘুম কমে যাওয়া, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া খাওয়ায় অরুচি বা মাইগ্রেনের কারণ হিসেবেও একে দায়ী করা হয়।
একে স্বাস্থ্যকর বলা কঠিন। তারপরও মাঝেমধ্যে পার্টি বা কোনো অনুষ্ঠানে কীভাবে পান করলে ক্ষতি কিছুটা কমানো যাবে, আসুন সেটি দেখি।
১. কোনোভাবেই খালি পেটে কোল্ড ড্রিংক পান করবেন না। একটু ভরা পেটে পান করুন।
২. বড় গ্লাসে না নিয়ে ছোট গ্লাস বেছে নিন।
৩. গ্লাসে সরাসরি না পান করে ধীরে ধীরে স্ট্র দিয়ে পান করুন।
৪. কোল্ড ড্রিংক ৬০ থেকে ৯০ মিলিলিটারের বেশি একসঙ্গে পান করবেন না।
৫. চিকন গ্লাসে বেশি করে বরফ কুচি নিয়ে তাতে ড্রিংক ঢালুল। এতে অল্পতে গ্লাস ভরে যাবে; কম খাওয়া হবে।
৬. কোল্ড ড্রিংকের সঙ্গে লেবু স্লাইস মিশিয়ে খেলে ভালো।
৭. চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর কখনো কোল্ড ড্রিংক পান করতে নেই। একটু হালকা খাবার খাওয়ার পর পান করুন।
৮. কোল্ড ড্রিংক পান করার পর দাঁত ব্রাশ করুন।
৯. আমাদের দেশে বেশির ভাগ জায়গায় তিন রঙের কোল্ড ড্রিংক পাওয়া যায়। তাই খেতে হলে কালো বা কমলা রঙের পরিবর্তে, সাদা রঙের কোল্ড ড্রিংক পান করা তুলনামূলকভাবে শ্রেয়। এতে রঙের ক্ষতি হতে কিছুটা রক্ষা পাবেন।
১০. বাজারে দুই বা তিন লিটার কোল্ড ড্রিংক না কিনে ৫০০ বা ২৫০ মিলিলিটার কিনলে ভালো। এতে ভাগাভাগি করে খেলে কম খাওয়া হয়।
১১. যাত্রাপথে কখনো কোল্ড ড্রিংক পান করবেন না।
১২. ব্যায়ামের পর কোল্ড ড্রিংক পান করা থেকে বিরত থাকুন।
১৩. যাঁদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বিকেল বেলার পর কোল্ড ড্রিংক পান করবেন না।
১৪. কোল্ড ড্রিংক পান করার ইচ্ছা হলে দুপুরবেলা খাওয়ার পর পান করুন। এতে বিকেলে হেঁটে কিছুটা ক্যালরি খরচ করা যেতে পারে।
ওপরের পরামর্শগুলো মেনে মাঝেমধ্যে কোল্ড ড্রিংক পান করা যেতে পারে। তবে মনে রাখবেন, এই পরামর্শ প্রতিদিনের জন্য নয়। মাসে দুই বা একবার এমন করে পান করতে পারেন অথবা কোনো অনুষ্ঠানে অল্প করে পান করা যেতে পারে। কোল্ড ড্রিংক কখনই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কোল্ড ড্রিংক পান করার ইচ্ছা হলে ঠান্ডা পানিতে একটু লেবু, পুদিনা, মধু আর বরফ দিয়ে পান করলে নেশা কমে যাবে।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।