পেট্রলবোমায় পুড়ে গেলে কী করবেন
আজকাল রাস্তাঘাটে একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কারণ হরহামেশাই পেট্রলবোমার আঘাতে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। ঘটছে মৃত্যুর ঘটনা। আর যাঁরা বেঁচে থাকছেন তাঁদের পার করতে হচ্ছে দুর্বিষহ জীবন।
পেট্রলবোমার আঘাতে পুড়ে গেলে সেটি অন্যান্য পুড়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে বেশি ভয়াবহ হয়। পেট্রলবোমা এমন কিছু পদার্থ দিয়ে তৈরি যা গরম বাতাস তৈরি করে। এটি শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ধরনের অবস্থায় প্রাথমিকভাবে কী করা যায় তা নিয়ে জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. কামরুল আক্তার সঞ্জু।
জোরে শ্বাস টানবেন না
এ রকম অবস্থায় পড়লে অধিকাংশ সময় আমরা জোরে শ্বাস টানি। এটি করা ঠিক না। এভাবে শ্বাস নেওয়ার ফলে বিস্ফোরণ থেকে যে গরম বাতাস তৈরি হয় তা ভেতরে প্রবেশ করে। যার ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট হয় এবং এটি শ্বাসনালি, ফুসফুস ইত্যাদি বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর শ্বাসনালি পুড়ে গেলে সেই রোগীকে বাঁচানো কষ্টকর হয়।
পানি ঢালবেন না
অন্যান্য পোড়ার ক্ষেত্রে গায়ে পানি ঢাললেও এসব পোড়ায় পানি ঢালা যাবে না। বালুজাতীয় জিনিস দিতে হবে।
ভারী কাপড় দিয়ে চাপা দিন
গায়ের পোশাক দ্রুত খুলে ফেলতে হবে। কম্বল বা ছালা দিয়ে জড়িয়ে ধরতে হবে। গায়ে মেটালের কোনো জিনিস বা স্বর্ণালংকার থাকলে দ্রুত খুলে ফেলতে হবে। কেননা পোড়ার পরে শরীর ফুলে যায়। তখন এগুলো খোলা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
দ্রুত হাসপাতালে যান
শরীর পুড়ে গেলে মাথা উঁচু করে ৪৫ ডিগ্রিতে ধরে রাখুন। যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনো ফার্মেসি বা ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে শরীরে স্যালাইন যোগ করতে হবে এবং হাসপাতালে যেতে হবে। স্যালাইনের অনুপাতে পাঁচ শতাংশ ডিএনএস, সাধারণ সলিউশন, হার্টমেন সলিউশন দিতে হবে। তবে অবশ্যই সেটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
পরামর্শ
যেহেতু যে কেউই যে কোনো খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন তাই তৈরি থাকা ভালো। বাইরে চলাফেরা করতে সুতির কাপড় পরাই ভালো। পেট্রলবোমা হামলা হলে এতে শরীর কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু সিনথেটিক কাপড় পরলে তা শরীরে লেপ্টে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাসপাতালে করণীয়
পেট্রলবোমার আঘাতে আহত রোগীকে হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ এবং অক্সিজেন দেওয়া হয়। এরপর রোগীর অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, পোড়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার কাছে ভিড় করা যাবে না। দর্শনার্থী যত কম হবে ততই ভালো।