খালেদা জিয়ার মনোবল অটুট আছে : এমাজউদ্দীন
গুলশান কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, ডিশ, ব্রডব্যান্ড, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ করার পরও সেখানে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোবল অটুট আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ।
শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ওই কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদারও ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁরা বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে সহমর্মিতা জানানোর জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখলাম, সেখানে বিদ্যুৎ, ডিশ লাইন, ইন্টারনেট ও ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা গর্হিত পদক্ষেপ। তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অমানবিক। এখানে যা ঘটছে তা শুধু বাংলাদেশের রাজনীতিতেই সম্ভব। এ ঘটনার পর কেউ যদি পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে গণতন্ত্রের জন্য চিৎকার করেন, তাহলেই কেবল গণতন্ত্রই বিনষ্ট হয়।’
এ সময় সাংবাদিকরা কর্মসূচির ব্যাপারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বলেন, এটি তাঁর দল নির্ধারণ করবে। আমার সঙ্গে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
খালেদা জিয়ার মনোবল অটুট ও দৃঢ় আছে উল্লেখ করে এমাজউদ্দীন আহমদ আরো বলেন, কিছুদিন আগে এখানে পেপার স্প্রে করা হলো। এখন এখানে অন্ধকারের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। এভাবে কারো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। বাংলাদেশের সংবিধানে ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এখানে সংবিধানে রক্ষিত ব্যক্তির নিরাপত্তার সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘নির্যাতনের পরও খালেদা জিয়া আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আছেন। তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
এর কিছু পরই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভেতরে মোমবাতির আলোয় খালেদা জিয়া অবস্থান করছেন। এটা মানা যায় না। খালেদা জিয়া এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে দেশ-বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে এ ব্যাপারে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।’
রুহুল আমিন গাজী আরো বলেন, রাজনীতিতে দলীয় মতভেদ থাকতেই পারে। আমরা সাংবাদিকরা আলোচনার মাধ্যমে সেই মতভেদ দূর করার কথা বলে আসছি। এটা রাজনৈতিক ঘটনা, রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান করা উচিত।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির লোক এসে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। গুলশান থানার নির্দেশেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে ডেসকো থেকে দাবি করা হলেও গুলশান থানার পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এর পর সকাল ৮টার দিকে কেব্ল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানকারীরা কোনো ধরনের স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন না।