শীতে প্রবীণদের যত্ন কেন জরুরি
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়োবৃদ্ধদের নানা অসুখ দেখা দেয়। শারীরিক সমস্যা বেড়ে যায়। শীতে প্রবীণদের চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন শরীরের প্রতি বাড়তি যত্ন ও সচেতনতা।
বয়সের কারণে প্রবীণদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও কর্মক্ষমতা কমে যায়। তাই এ সময়টায় তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তীব্র শীতে অ্যালার্জি, হাঁপানি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ হয়ে থাকে। যদি কারো রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিও আর্থ্রাইটিস এসব সমস্যা থাকে, তবে শীতে সেটি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ সময় শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে হাইপোথারমিয়া হতে পারে, যার ফলে বয়স্কদের অজ্ঞান হওয়া থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হয়।
এসব রোগ প্রতিকারে এ সময় হালকা ব্যায়াম করতে হবে। ঠান্ডার কারণে যদি বাইরে নাও বের হন, তবে ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, হাত-পা নাড়াচাড়া করুন। এতে শরীরে তাপ উৎপন্ন হবে। ব্যায়াম করলে সর্দি-কাশি-জ্বর ইত্যাদি রোগ কম হয়। শীতপোশাক পরার ক্ষেত্রেও সচেতন হওয়া দরকার। একটি মোটা কাপড় পরার চেয়ে কয়েকটি পাতলা কাপড় পরলে শীত কম লাগবে। রাতে গলা ও কানে পাতলা কাপড় জড়িয়ে ঘুমাতে যান, এতে ঠান্ডা লাগবে না।
শীতে খাওয়া-দাওয়ায় পরিবর্তন করা প্রয়োজন। ঠান্ডা খাবার অবশ্যই বাদ দিতে হবে। এ সময় শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই শীতে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন। এ ক্ষেত্রে গরম দুধ, ফলের রস, বিভিন্ন ধরনের স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। নিয়মিত লেবু দিয়ে চা খাওয়া যেতে পারে। এটি শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করবে। এ ছাড়া প্রচুর ফল ও ফলের রস খেতে হবে। এটি শরীরের নিস্তেজ ভাব দূর করবে। ফলে প্রচুর ভিটামিন-সি থাকে, যা শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে। এ সময় প্রচুর শাকসবজিও খেতে হয়।
শীতে শরীরের অয়েল গ্ল্যান্ড থেকে তেল কম নিঃসৃত হয় বলে ত্বক খসখসে ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। ত্বক সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার লোশন, ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। যখনই মুখ পানি দিয়ে পরিষ্কার করবেন, তখনই কোনো ক্রিম বা লোশন মুখে ব্যবহার করুন।
আর বয়স বেড়ে গেলে এমনিতেই জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হয়। পরিবারের অন্য সদস্যরা যদি একটু দায়িত্ব নিয়ে প্রবীণদের দেখভাল করেন, তাহলে পরিবারের এই প্রবীণ সদস্য জীবন-সায়াহ্নের দিনগুলো সুখেই কাটাবেন।
ডাক্তার শ আ মোনেম : হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের রেজিস্ট্রার