শিশুর ঠাণ্ডায় খাওয়ান ভিটামিন-সি’যুক্ত ফল
শীতের সময় শিশুদের ঠাণ্ডা বা সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। আর আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়েও শিশুরা সর্দি-কাশি বা ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হতে পারে। অক্টোবর থেকে মার্চ—এই কয়েক মাসে সাধারণত সর্দি-কাশি ও ভাইরাল জ্বর বা ফ্লু-এর প্রকোপ বেশি হয়। তবে পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের প্রায়ই হালকা ঠান্ডা, সর্দি-কাশি হওয়াটা স্বাভাবিক। শীতে শিশুদের নিউমোনিয়া, ব্রংকিওলাইটিস, অ্যালার্জির কারণে হাঁপানি—এসব রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। এ জন্য বাড়তি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
উপসর্গ
সর্দি-কাশি হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই সংক্রমণের জন্য দায়ী রাইনো ভাইরাস। অনেক ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণেও রোগটি দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি পড়া, খুকখুক কাশি, ঘড়ঘড় শব্দের সঙ্গে জ্বর, গা ম্যাজম্যাজ, গলা বা কান ব্যথা—যেকোনো উপসর্গই হতে পারে। কারও কারও এর সঙ্গে বমি ও নরম মলও বের হয়।
সমস্যা হলে যা করবেন
এ রোগের চিকিৎসায় শিশুর নাক বন্ধ বা নাকে সর্দি হলে নরমাল স্যালাইন ড্রপ বা বাড়িতে তৈরি স্যালাইন পানি দিয়ে একটু পরপর নাক পরিষ্কার করে দিন। শিশুকে পাশ ফিরিয়ে নাকে পানি গড়িয়ে পড়তে দিন এবং টিস্যু দিয়ে মুছে দিন। তবে প্রচলিত কফ সিরাপ বা অন্য কোনো ওষুধ না দেওয়াই ভালো।
ছয় মাস বয়সের নিচে হলে শিশুকে কেবল মায়ের বুকের দুধই বারবার দিন। শিশুর বয়স যদি ছয় মাস বয়সের ওপর হয় এবং শিশুর কাশি থাকলে কুসুম গরম পানিতে মধু, আদার রস বা তুলসী পাতার রস, লেবু দিয়ে গরম পানি বা চা ইত্যাদি দিতে পারেন। সর্দি-কাশি বা অরুচির জন্য শিশু একবারের বেশি খেতে পারে না, তাই বারবার খাবার দিন। পানিশূন্যতা রোধে তরল খাবার বেশি দিন। ভিটামিন-সি’যুক্ত ফল খাওয়ান।
যখন সমস্যা গুরুতর
শিশু সাধারণ যত্ন ও শরীরে পুষ্টি পেলে এ সমস্যা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেরে যাওয়ার কথা। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি জটিলও হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে। যদি শিশু ঘনঘন শ্বাস নিতে থাকে, নিশ্বাসের সঙ্গে পাঁজর ভেতরের দিকে দেবে যায়, শিশু খাওয়া বন্ধ করে দেয় ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে, শিশুর খিঁচুনি হয় বা জ্বর অনেক বেড়ে যায় অথবা জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হয়—তবে অবশ্যই তাকে হাসপাতালে নিতে হবে।
ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার : সহকারী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।