দ্রুত দৌড়ানো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
ধরুন, আপনি বেশ মুটিয়ে যাচ্ছেন। পরিচিত কেউ আপনাকে দেখলে বলে উঠলেন, ‘আরে তুমি তো মোটা হয়ে যাচ্ছ। বেশি করে ব্যায়াম কর, কিংবা রোজ জোরে জোরে দৌড়াও।’ আর তাঁর কথা শুনে আপনিও সকালে উঠেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিলেন। তাহলে আপনাকেই বলছি, দ্রুত দৌড়িয়ে কিংবা অতিরিক্ত ব্যায়াম করে, সুস্থ থাকার বদলে মৃত্যুকেই কাছে ডেকে আনছেন না তো? আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে কিন্তু এমন কথাই বলা হয়েছে!
এক হাজার ৯৮ জন দৌড়বিদের ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, যেসব দৌড়বিদ প্রচণ্ড গতিতে দৌড়ান, আর যাঁরা কোনো রকমের শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই বেঁচে থাকেন, তাদের উভয়েরই মৃত্যুর হার এক। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন ফ্রেডরিকসবার্গ হসপিটালের সিটি হার্ট স্টাডির গবেষক পিটার স্কনর বলেছেন, দীর্ঘসময় ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যায়াম করলে তা মানুষের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়ার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই সুস্বাস্থ্য পাওয়ার জন্য ব্যায়ামের একটা নির্দিষ্ট সীমা থাকা উচিত।
পিটার স্কনর আরো বলেন, যদি কেউ মৃত্যুঝুঁকি কমাতে এবং আয়ু বাড়াতে ব্যায়াম করতে চান তাহলে সপ্তাহে অল্প সময়ের জন্য দৌড়াতে পারেন। কেননা যেকোনো ধরনের ব্যায়ামই বেশিমাত্রায় করলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ হাজার ৪৮ জন স্বাস্থ্যবান মানুষের ওপর এই কোপেনহেগেন সিটি স্টাডি জরিপ চালানো হয়। গবেষণা শেষে দেখা যায়, সপ্তাহে এক থেকে দুই দশমিক চার ঘণ্টা দৌড়ালে দ্রুত মৃত্যুর সম্ভাবনা কমে যায়। এ ছাড়া সপ্তাহে তিনবারের বেশি কখনোই দৌড়ানো উচিত না বলে জানানো হয়েছে। ২৮ জন দৌড়বিদ ও ১২৮ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দৌড়বিদরা অপেক্ষাকৃত কম বয়সে মারা গেছেন।
তাই একেবারে কোনো পরিশ্রম না করা কিংবা অতিরিক্ত ব্যায়াম বা দৌড়ের চেয়ে অল্প ও পরিমিত পরিমাণে দৌড়ের ওপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা। কেননা এতেই ভালো ফল পাওয়া যাবে।