নাজিবের টাকা গুনতে লাগল দুই দিন
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের একাধিক বিলাসবহুল বাসভবন তল্লাশি করে প্রায় ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই অর্থ গুনতে ২২ জন ব্যাংক কর্মকর্তার লেগেছে দুই দিন। এ ছাড়া উদ্ধার করা জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল ৩৭ ব্যাগ অলংকার, দামি ব্যাগ ও ঘড়ি।
সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এই খবর জানিয়েছে। গত সপ্তাহে নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে পরিচালিত অভিযানে এসব অর্থ, দামি ব্যাগ, ঘড়ি উদ্ধার করা হয়।
নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে ৭০ কোটি ডলার সরকারি তহবিল তছরুপের অভিযোগ আনা হয়। ওই অভিযোগের তদন্ত অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিচালক অমর সিং জানান, উদ্ধার করা ওই অর্থের মধ্যে ২৬ দেশের মুদ্রা পাওয়া গেছে। তবে মালয়েশিয়ার রিংগিত, সিঙ্গাপুরের ডলার, মার্কিন ডলার সব থেকে বেশি ছিল।
অমর সিং জানান, ৩৫টি বাক্সে অর্থ পাওয়া গেছে। বাকি ৩৭টি বাক্সে অলংকার ও ঘড়ি রয়েছে। এসব কী পরিমাণ তা পরে গুনতে হবে।
এ বিষয়ে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলছেন, ‘নাজিবের বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের কেলেংকারির ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও ছয়টি দেশ এই দুর্নীতির তদন্ত করছে।’
নাজিব রাজাক যদিও এই দুর্নীতির কথা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন। গত সপ্তাহে তাঁর আইনজীবী হারপাল সিং এই অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে বলেছেন, ‘হয়রানি করার জন্য এই অভিযান চালানো হচ্ছে।’
অভিযোগ উঠেছে নাজিবের স্ত্রী রোশমা মানসুরের বেহিসাবি খরচ করতেন। আর জনগণের তহবিল থেকে এসব অর্থ নেওয়া হত। রোশমা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতেন। সেই সময় দামি ব্যাগ, ঘড়ি, অলংকার কিনে আনতেন। যদিও এসব ব্যাপারে কখনও কিছুই বলেননি নাজিবের স্ত্রী।
গত ৯ মে নির্বাচনে ১৯৫৭ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ন্যাশনাল ফ্রন্টের পতন হয়। ওই জোটের নেতৃত্বে ছিলেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। নির্বাচনে মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট ‘অ্যালায়েন্স অব হোপ’ জয়লাভ করে।
নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক তাঁর দল এবং জোটের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।