রম্য
বিশ্বকাপ শেষে পাঁচ সমস্যা
শেষ হয়ে গেছে বিশ্বকাপ ফুটবল। বিশ্বকাপকে অবলম্বন করে যাঁরা গত এক মাস চলেছেন, এখন তাঁরা পড়েছেন সমস্যায়। বিস্তারিত জানাচ্ছেন হাস্যরস প্রতিবেদক।
সমস্যা নম্বর ১ :
বিশ্বকাপ চলাকালীন অনেকেই সকালে দেরিতে অফিসে গেছেন। এরপর বসের প্রশ্নের জবাবে উত্তর দিয়েছেন, ‘বস, কাল রাতে বিশ্বকাপের জম্পেশ ম্যাচ ছিল। সেটা দেখে ঘুমাতে দেরি হওয়ায়...।’ বিশ্বকাপ বলে কথা, বস আর কী বলবেন। কিন্তু এখন বিশ্বকাপ নাই, তাই দেরিতে অফিসে গেলে এবার আর রক্ষা নাই।
সমস্যা নম্বর ২ :
বিশ্বকাপের সময়টুকুতে ক্লাসে পড়া না পারলেও শিক্ষকের বকুনি থেকে বেঁচে গেছে অনেক শিক্ষার্থী। যে বিষয়ের পড়া পারে না, সে বিষয় শুরু হতেই বিশ্বকাপের আলাপজুড়ে দিত শিক্ষার্থীরা। ‘স্যার, কাল রাতের ম্যাচটা দেখেছেন?’ ‘স্যার, আপনি কোন দলের সমর্থক?’ ‘স্যার, আপনার দল তো বিদায় নিল, এবার আমাদের দলে চলে আসুন’, ‘স্যার, অমুক কি দুর্দান্ত খেলায়। তাই না?’ বিশ্বকাপ সংক্রান্ত এসব নানা খেজুরে আলাপ দিয়ে স্যারকে ব্যস্ত করে ক্লাসের সময় পার করে দিত পড়া না পারা শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এখন তো বিশ্বকাপ নেই, তারা এখন কী করবে?
সমস্যা নম্বর ৩ :
মানুষের মধ্যে অনেক নিশাচর প্রাণী আছেন। এরা রাতকে ঘুমানোর নয়, জেগে থাকার সময় বলে মনে করেন। এই শ্রেণির লোকদের জন্য বিশ্বকাপ ছিল দারুণ পাওয়া। কেননা, মধ্যরাতে বিশ্বকাপের ম্যাচ শুরু হয়ে কোনোটা শেষ রাত অবধি চলত। নিশাচর মানুষরাও আরাম-আয়েশে বিশ্বকাপ দেখে রাত পার করে দিতেন। কিন্তু বিশ্বকাপ শেষে এখন খানিকটা ঝামেলাই হলো তাদের জন্য।
সমস্যা নম্বর ৪ :
বিশ্বকাপকে ঢাল বানিয়ে অনেক প্রেমিকই গেল কয়দিন ডেটিংয়ে ফাঁকিবাজি করেছেন। ‘রাতে ম্যাচ দেখে ঘুমাতে দেরি হবে, কাল সকালে আসতে পারব না’, ‘আজ সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে, দেখা হচ্ছে না জানু’, ‘রাত জেগে খেলা দেখে বড্ড ক্লান্ত; আজ ডেটিং বাদ দাও’—এসব নানা অজুহাত দিয়ে প্রেমিকরা পার পেয়ে গেছেন। এখন বিশ্বকাপ নাই, ফাঁকিবাজিরও সুযোগ নাই। যেতে হবে ডেটিংয়ে। আর ডেটিং মানেই প্রেমিকের পকেট থেকে একগাদা টাকা খরচ।
সমস্যা নম্বর ৫ :
বিশ্বকাপ চার বছরে একবার আসে। এই বিষয় বিবেচনা করে মাসখানেক টিভির রিমোটের ‘দখলদারিত্ব’ স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন স্ত্রী। স্বামীরা মনের খুশিতে খেলা দেখেছেন, কখনো কখনো অন্য অনুষ্ঠানেও ঢুঁ মেরেছেন। এখন আর চাইলেই এই চ্যানেল-ওই চ্যানেলে ঘুরতে পারবেন না স্বামীরা। রিমোট যে চলে গেছে স্ত্রীর হাতে।