পিপি রথীশ হত্যায় স্ত্রী-প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
রংপুরে বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা জজ আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবুসোনা হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। আজ সোমবার এক ব্রিফিংয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।
দুপুরে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তাঁর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, নিহত বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তাঁর কথিত প্রেমিক কামরুল ইসলামকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই স্কুলছাত্রকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রংপুরের দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক উৎস রহমান হত্যা মামলার অভিযোগপত্রও আদালতে দাখিল করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
গত ৩০ মার্চ অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নগরীর বাবুপাড়ার বাসা থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পাঁচদিন পর র্যাব ১৩-এর সদস্যরা রথীশ চন্দ্রের গলিত লাশ উদ্ধার করে। স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক পরকীয়ার কারণে প্রেমিক কামরুলের সহায়তায় নিজ বাসায় স্বামী রথীশকে হত্যা করে লাশ গুম করেছিলেন এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আলামিনসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচদিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৩ এপ্রিল রাতে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবুসোনার লাশ উদ্ধার করেন র্যাব-১৩ সদস্যরা। এর আগে রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিককে আটক করে র্যাব। স্নিগ্ধাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি পরকীয়ার কারণে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এরপর স্নিগ্ধার দেওয়া তথ্যানুযায়ী র্যাব উদ্ধার অভিযান চালায়। রাত ১১টার দিকে রথীশের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের কাছে স্নিগ্ধার প্রেমিক কামরুল ইসলামের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির একটি ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করেন র্যাব সদস্যরা। পরে রথীশের ভাই সুশান্ত কুমার ভৌমিক গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
এ হত্যার পরিকল্পনা করা হয় দুই মাস আগে। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করেন স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিক ও তাঁর প্রেমিক কামরুল ইসলাম। দুজনই রংপুরের তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। রথীশকে হত্যার পর মাটিচাপা দিতে দুই ছাত্রকেও ব্যবহার করেন তাঁরা।