রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার: কানাডা
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি দিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে কানাডার পার্লামেন্ট। এদিকে মিয়ানমার যদি রোহিঙ্গা নিপীড়নে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে না পারে, তাহলে হেগে অবস্থিত আইসিসির মাধ্যমে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হতে হবে, এমনটা বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতন ছিল গণহত্যা। এমন স্বীকৃতি দিয়ে, কানাডার পার্লামেন্টের ক্ষমতাসীন আর বিরোধী দলের সদস্য, সবাই সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়ে প্রস্তাব পাশ করে। রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা ও তাদের নির্যাতনকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে এ প্রস্তাব পাশ হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার হাউস অব কমনসে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করেন কানাডার আইনপ্রণেতারা। এরপর রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধকে গণহত্যা বলে রায় দেন।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, ‘কানাডা রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে কানাডার হাউজ অব কমন্স সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাশ করেছে।’
এদিকে দুই দিনের সফরে মিয়ানমারের রাখাইন ঘুরে দেখেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। বৈঠক করেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে। সু চির কাছে রোহিঙ্গা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু মিয়ানমার, নিজ দেশে দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান জেরেমি হান্ট।
জেরেমি হান্ট বলেন, ‘দেশটি এখনো পুরোপুরি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হতে পারেনি। সু চির কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলে ধরেছি। তিনি যদি ব্যর্থ হন, তাহলে অপরাধী সেনা কর্মকর্তাদের হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা, দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর সু চির নিয়ন্ত্রণ নেই।’
আগামী সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি আলোচনার কথা রয়েছে। সুচি না গেলেও, এতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
এদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে, মিয়ানমারে সাজাপ্রাপ্ত রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।