ছেঁউড়িয়ায় আজ শুরু লালন স্মরণোৎসব
‘মিলন হবে কত দিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে’ বাউলসম্রাট লালন ফকিরের এই গানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে হরতাল-অবরোধের মধ্যেও দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী-দর্শনার্থী ভিড় করছেন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায়। আজ বুধবার থেকে সেখানে পাঁচ দিনের লালন স্মরণোৎসব শুরু হচ্ছে।
এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আজ রাতে বিশাল এই লালন স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ।
লালনভক্ত ও গবেষকরা জানান, কোনো এক চৈত্রের দোল পূর্ণিমায় কুষ্ঠ রোগী লালন কালী নদীতে ভেলায় ভাসতে ভাসতে কুষ্টিয়ার এই ছেঁউড়িয়ায় আসেন। এখানকার বাসিন্দা মলম শাহ তাঁকে উদ্ধার করে সেবা-চিকিৎসা করে বাঁচিয়ে তোলেন। লালন জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়িতে প্রতিবছর চৈত্রের দোল পূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে এ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক তাঁর মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন লালনের অনুসারীরা। এটিকে দোল উৎসব হিসেবেই জানেন লালন অনুসারীরা।
লালন একাডেমির পরিচালনায় এবারও এই দোল উৎসব পালিত হচ্ছে। লালন ফকিরের জাতহীন মানবধর্মে দীক্ষিত হয়ে তাঁর জীবনকর্ম, ধর্ম-দর্শন, মরমিসংগীত ও চিন্তা-চেতনা থেকে শিক্ষা নিতে দাওয়াতপত্র ছাড়াই দিনক্ষণ ঠিক রেখে এবারও সাঁইজির ধামে ছুটে আসছেন ভক্ত, অনুসারী, দর্শনার্থীরা।
কয়েকজন লালন অনুসারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধের কারণে অনেকে বেশ কিছুদিন আগেই চলে এসেছেন।
লালনগবেষক হৃদয় শাহ ফকির বললেন, লালনের মত ও পথেই দেশে শান্তি আসতে পারে। কেননা, এ পথের মানুষ কখনোই অশান্তি করে না।
আয়োজকরা বলছেন, এবার লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে এখানে। তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আগের যেকোনো সময় থেকে এবার লালনের রীতিনীতি মেনে ভিন্ন রকম এক জমকালো উৎসব হবে।
পদাধিকারবলে লালন একাডেমির সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, বিশাল এ উৎসব নির্বিঘ্নে করতে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।