ছেঁউড়িয়ায় লালন স্মরণোৎসব শুরু
‘এই মানুষে আছে রে মন, যারে বলে মানুষ রতন’—লালন ফকিরের এই আধ্যাত্মিক বাণী ধারণ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। উৎসবে সংগীতানুষ্ঠান ও লালন মেলারও আয়োজন করা হয়েছে।
অসংখ্য লালনভক্ত, অনুসারী আর দর্শনার্থীকে নিয়ে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে গতকাল বুধবার রাতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ উৎসবের উদ্বোধন করেন। হরতাল-অবরোধের মধ্যেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই লালন আখড়ায়।
বাউলসম্রাট লালন নিজেই চৈত্রের দোল পূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে উৎসব করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে দোল পূর্ণিমার চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়া শহরতলির কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় কালী নদীর তীরে শুরু হয়েছে লালন স্মরণোৎসব। হরতাল-অবরোধে বাধার মুখেও লালনভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী আর দর্শনার্থীরা এখন ভিড় করছেন এই ভবের হাটে। নবীন ও প্রবীণ ভক্তরা ফকির লালনকে স্মরণের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি ও মুক্তির লক্ষ্যে লালনের আখড়াবাড়ীতে অবস্থান নিয়েছেন।
লালনের সমাধির প্রধান খাদেম মহাম্মদ আলী শাহ ফকির বলেন, ‘লালন ফকির নিজেই এ উৎসব করতেন। তাই আমাদের কাছেও এ উৎসবের গুরুত্ব অনেক। প্রকৃত লালনভক্তের কাছে হরতাল-অবরোধ কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খুলনার বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ বলেন, ‘বিশ্বে শান্তির জন্য চেষ্টা চলছে, আর এ সময় লালনই আমাদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠতে পারে।’
এদিকে, আখড়াবাড়ীর ভেতরে ও বাইরে লালন অনুসারীরা দল বেঁধে লালনের একের পর এক আধ্যাত্মিক গান পরিবেশন করছেন।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম বলেন, বিশাল এ উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রেখেছে পুরো এলাকা। পাঁচ দিনব্যাপী এ স্মরণোৎসব ভাঙবে ৮ মার্চ রাতে।