মনমোহন সিংয়ের সমর্থনে সোনিয়ার পদযাত্রা
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সমর্থনে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও বিভিন্ন দলের নেতারা পদযাত্রা করেছেন। কয়লা দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের সমন জারির একদিন পর আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে মনমোহনের বাসভবনের কাছে এই পদযাত্রা করেন।
পদযাত্রার আগে কংগ্রেস নেতারা সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনের কাছে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে সমবেত হন। এ সময় সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘সৎ ব্যক্তি হিসেবে মনমোহন সিং কেবল ভারতে নয়, সারা বিশ্বে পরিচিত। আমরা তাঁর পাশে রয়েছি এবং আইনগতভাবে এই মামলার বিরুদ্ধে লড়াই করব।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মনমোহনের সমর্থনে একটি জোরালো ও স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। জ্বরের কারণে কংগ্রেস সভানেত্রী গত কয়েকদিন পার্লামেন্ট অধিবেশনে উপস্থিত হননি। এমনকি গতকাল মনমোহনের বিরুদ্ধে সমন জারির পরও কোনো কথা বলেননি। তবে আজ তিনি মনমোহনের পক্ষে এই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। মনমোহনকে সমর্থন জানিয়ে কংগ্রেসের নেতারা সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিং করেছেন।
আদালতের সমন জারির পর ৮২ বছর বয়সী মনমোহন এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি হতাশ হয়েছি, কিন্তু এটি জীবনের একটি অংশ। সত্য জয়ী হবেই।’
কয়লা দুর্নীতি মামলায় গতকাল বুধবার দেশটির একটি বিশেষ আদালত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। মনমোহন ছাড়া আসামির তালিকায় অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানি হিন্ডালকো, এর চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলাম বিড়লা ও সাবেক কয়লাসচিব পিসি পরখের নাম রয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে তাঁদের।
মনমোহন সিং ও অন্যদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত সংস্থা সিবিআই আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানালে আদালত তা অস্বীকার করেন।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের আগ পর্যন্ত মনমোহন সিং দীর্ঘ ১০ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৫ সালে ওড়িশায় কয়লাখনি তালাবিরা ব্লক থেকে হিন্ডালকো কোম্পানিকে অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সে সময় মনমোহন সিং সরাসরি কয়লা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করতেন।
আদিত্য বিড়লা গ্রুপের কোম্পানি হিন্ডালকোকে প্রথমবার কয়লাখনি বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের, পরে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। কোম্পানিটি দুর্নীতির বিষয় অস্বীকার করেছে। ২০১৩ সালে বিবৃতি দিয়ে খনি বরাদ্দের বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন মনমোহন।