ঈগলের চোখে দুবাই শহর
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের ৮২৯ মিটার উঁচু বুর্জ আল খলিফা ভবন থেকে উড়াল দিল একটি ঈগল। এটি সাধারণ কোনো ঈগল নয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যামেরাবাহী ঈগল। দর্শন নামের ঈগলটি বুর্জ আল খলিফা ভবনটি কয়েকবার চক্কর দিল। আর এই সময় বিশ্ববাসী দেখল ‘ঈগলের’ দুবাই শহর।
দর্শন ঈগলের শনিবারের অভিযানটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এটি একটি বিশ্বরেকর্ড-মানুষের তৈরি কোনো স্থাপনা থেকে কোনো পাখির সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওড়া। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানানো হলো ঝুঁকির মুখে থাকা এই পাখি প্রজাতি সম্পর্কে।
ঈগল দিয়ে ক্যামেরা বহন করে বুর্জ আল খলিফা থেকে ছবি তোলার সম্মিলিতভাবে আয়োজন করে জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ও পরিবেশবাদী সংস্থা সেভ আওয়ার স্পিশিস ও ফ্রিডম কনজারভেশন। এদের লক্ষ্য ছিল ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করা।
দর্শন ঈগল বুর্জ আল খলিফা ভবনটি চক্কর দেওয়ার সময় এর পিঠে ৩০০ গ্রাম ওজনের একটি বিশেষায়িত ক্ষুদ্রাকৃতির ক্যামেরা বহন করে। ঈগলটি ৮২৯ মিটার ওপর দিয়ে ওড়া অবস্থায় ক্যামরার ধারণ করা ভিডিওচিত্র সরাসরি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল, বিবিসি ওয়ার্ল্ড ও কয়েকটি ওয়েবসাইটে সরাসরি প্রচার করা হয়। ভিডিওচিত্রে দেখা যায় ‘ঈগলের চোখে’ দুবাইয়ের শহরতলি।
দর্শন নামের ঈগলটি বুর্জ আল খলিফাকে ঘিরে কয়েকবার চক্কর দিয়ে এর প্রশিক্ষক জ্যাকুয়াস-ওলিভার ট্রেভরের কাছে ফিরে আসে। ঈগলের ওড়ার সময় ট্রেভরের হাতে ছিল একটি যোগাযোগ রক্ষাকারী যন্ত্র। যন্ত্রটি দিয়ে তিনি ঈগলকে গতিপথের নির্দেশনা দেন। ট্রেভর বলেন, ঈগলের তোলা দুবাইয়ের ভিডিওচিত্রটি যাঁরা দেখছেন, তাঁরা এখন থেকে ঈগলকে অন্য দৃষ্টিতে দেখবেন।
ঈগলের অভিযানের অনেক আগেই পুরো এলাকা জরিপ করে এর পরিকল্পনা করা হয়। পরে ঈগলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর জোগাড় করা হয় বিশেষ নকশার ক্যামেরা। পুরো প্রক্রিয়ায় সময় লাগে ৪২ দিন।
ফ্রিডম কনজারভেশনের পক্ষ থেকে ঝুঁকির মুখে থাকা পাখি দিয়ে এর আগেও ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার, লন্ডনের সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল থেকে পাখি ওড়ানো হয়।
শনিবারের আয়োজন প্রসঙ্গে ফ্রিডম কনজারভেশনের কর্মকর্তা রোনাল্ড মেনজেল বলেন, এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে সচেতন করা গেছে। তিনি বলেন, শনিবারের আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের লাখো মানুষ ঈগলের চোখে দুবাই শহর দেখেছে। এই দৃশ্য মানুষকে ঈগল পাখি রক্ষায় উদ্বুদ্ধ করবে।