ইয়েমেনে সৌদি আরবের হামলা অব্যাহত, নিহত ৩৯
ইয়েমেনের শিয়া বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে গতকাল শুক্রবার রাতেও বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। বন্দর নগরী এডেনে হাউথি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে গত বুধবার শুরু হওয়া এই বিমান হামলায় এ পর্যন্ত শিশুসহ ৩৯ জন নিহত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর সমর্থকরা বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে।
২০১২ সালে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে সালেহ পদত্যাগ করার পর ইয়েমেনে অস্থিরতা দেখা দেয়।
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের অভিযান শুরুর পরই ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মুনসুর হাদি এডেন থেকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে পালিয়ে যান। সেখান থেকে আজ তিনি মিসরে আরব লিগ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সৌদি আরব হাদির বৈধ সরকারকে রক্ষার অঙ্গীকার করেছে।
সৌদি আরবের অভিযোগ, ইরান হাউথি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে। এডেনে অভিযানে সৌদি নেতৃত্বাধীন এই জোটে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো ও মিসর রয়েছে।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত শুক্রবার আবারও সৌদি বাদশা সালমানকে এই সামরিক অভিযানের প্রতি তাঁর সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। ইয়েমেনের সেনাবাহিনী ও স্থানীয় অধিবাসী জানিয়েছে, হাউথি বিদ্রোহীদের অস্ত্র ভাণ্ডার ও ঘাঁটি লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বিমান হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে ছয়জন।
বিবিসি জানিয়েছে, হাউথি নেতা আব্দুল মালিক আল-হাউথি এই অভিযানকে অন্যায্য আগ্রাসন বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইরান সৌদি আরবের এই হস্তক্ষেপের নিন্দা করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ গতকাল শুক্রবার বলেন, ‘এই অভিযান বন্ধ করতে হবে’।
গত কয়েক মাস ধরে ইয়েমেন সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস অভিযান শুরু করেছে হাউথি বিদ্রোহীরা। গত জানুয়ারিতে বিদ্রোহীরা সানার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর হাদি গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন।গত মাসে তিনি সানা থেকে এডেনে আশ্রয় নেন। বিদ্রোহীরা এডেনের কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর হাদি সৌদি পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি মিসরে আরব সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই ইয়েমেনে আল-কায়েদার শাখা রয়েছে। আল-কায়েদা সদস্যদের রুখতে কয়েক বছর ধরে ইয়েমেন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা ও বিশেষ অভিযানের অনুমতি দিয়ে আসছিল।দেশটি থেকে মার্কিন বিশেষ বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর পরিস্থিতি আরো অস্থির হয়ে ওঠে। প্রতিবেশী দেশে এ ধরনের বিশৃঙ্খলাকে মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখছে সৌদি আরব। ইয়েমেনের সঙ্গে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।