ভারতীয় চ্যানেলে অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল, করিনি : শম্পা রেজা
মা দিবসের ‘দূরত্ব’ নাটকে অভিনয় করছেন স্বনামধন্য অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী শম্পা রেজা। গতকাল ধানমণ্ডিতে অভিনয়, ব্যক্তিগত বিষয় ও নানা প্রসঙ্গে তিনি কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
প্রশ্ন : মা দিবসের নাটকে অভিনয় করতে কেমন লাগছে?
উত্তর : আমি তো ১০০ ভাগ মা-গিরি করতে ভালোবাসি। মাঝেমাঝে আমার দুই ছেলে ধ্রুব ও তিয়াস তো বিরক্ত হয়। আমি আমার ছেলেদের সঙ্গে মনে হয় বেড়ে উঠেছি। কারণ আমার আচরণগুলোও বেবিদের মতোই ছিল। আমার ওস্তাদজির নাম ধ্রুবতারা। আমার বড় ছেলে ও ছোট ছেলের নাম ওস্তাদজির নাম অনুসারে রাখা।
ধ্রুব থেকে ধ্রুব আর তারার ত নিয়ে তিয়াস রেখেছি।
প্রশ্ন : আপনি তো আপনার ছেলেদের বোর্ডিং স্কুলে দিয়েছিলেন? তখন তারা কেমন ছিল?
উত্তর : কাজের ব্যস্ততার কারণে তাদের বোর্ডিং স্কুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা একদমই ভালো ছিল না। সব সময় কান্নাকাটি করত। এক বছর পর তাদের বাসায় নিয়ে আসি।
প্রশ্ন : মা দিবসে আপনাকে তারা কী উপহার দেয়?
উত্তর : বড় ছেলে তো বিদেশে থাকে। ছোট ছেলে ঢাকায়। আমরা আসলে সব সময় আসা-যাওয়ার মধ্যেই আছি। মা দিবস ছাড়াও তারা সব সময় উপহার পাঠায়।
আজকেও শুটিং শেষ করে আমার নাতনির সঙ্গে ঘুরব।
প্রশ্ন : এখনো এত প্রফুল্ল থাকেন কীভাবে?
উত্তর : জন্মের পর থেকেই আমি একই রকম আছি। আয়নার সামনে কখনো খুব একটা সময় কাটাইনি। জীবনেও বিউটি পারলারে যাইনি। পৃথিবীতে এসেছি, বয়স তো হবেই। খোশমেজাজে থাকতেই সব সময় ভালো লাগে।
প্রশ্ন : এখন সবাই ভারতের সিরিয়াল নাটক দেখে। বাংলাদেশের চ্যানেল থেকে দর্শক কেন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে আপনার মনে হয়?
উত্তর : আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমরা কেমন যেন গা ছেড়ে দিয়ে চলি। আমাদের ভবিষ্যৎ কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে তো। এ জন্য অনেক চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। ধরুন, একটা সিরিয়াল নাটক ১০০০ পর্ব করব। সেটার জন্য তো একটা গ্রাফ তৈরি করতে হবে। যেমন এ বছর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ অথবা রাজনৈতিক ইস্যু। সব হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও তাই করতে হবে। এসব বিষয় অনেকেই ভালো জানেন। একসময় বিটিভি অনেক জনপ্রিয় ছিল। বিটিভি দেখার জন্য ভারতীয়রা বসে থাকত।
এখন আমাদের সময়জ্ঞান কমে গেছে। শিশুদের অনেক অনুষ্ঠান হওয়া দরকার।
বাচ্চারা পুরনো ধাঁচের অনুষ্ঠান এখন আর পছন্দ করে না। তাদের আমরা অনেক অবহেলা করছি। বিশ্ব এখন অনেক এগিয়ে গেছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে তো। হিন্দি সিরিয়াল বা ছবির নকল করা আমাদের বাদ দিতে হবে। আমাদের চ্যানেল কেন দেখবে? যেখানে আমরা হিন্দিতেই উন্নত অনুষ্ঠান দেখতে পাচ্ছি। একসময় ভারতীয়রা আমাদের অনুষ্ঠান দেখত। আমরা কিন্তু তাদের অনুসরণ করতাম না। ভারতের চ্যানেলগুলোতে খুব কম বিজ্ঞাপন যায়। তারা অনুষ্ঠানের খিচুড়ি পাকায় না। যেমন গানের অনুষ্ঠানের মাঝখানে ১০ মিনিটের সংবাদ বিরতি দেয় না। তারা যখন যেটা প্রচার করে, তখন সেটাই করে।
প্রশ্ন : আপনি তো ভারতে ১২ বছর ছিলেন। তখন কি ভারতীয় চ্যানেল দেখতেন?
উত্তর : আমি দেখতাম না। পড়াশোনা নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। আমি মাস্টার্স করেছি ভারতীয় ক্লাসিক মিউজিক, ইংরেজি সাহিত্যে ও দর্শনে। পাশাপাশি তিনটি বিষয়েই একসঙ্গে পড়েছি। তখন ভারতীয় চ্যানেলে থেকে আমার অভিনয় করার প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু আমি করিনি। গানকে অনেক প্রাধান্য দিয়েছিলাম।