হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের পুতুল : ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট
ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মুনসুর হাদি হুতি বিদ্রোহীদের ইরানের পুতুল আখ্যা দিয়ে অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত বিদ্রোহীদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকবে। আজ রোববার মিসরের অবকাশযাপন কেন্দ্র শারম আল শেখে আরব লিগ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর পাশাপাশি তিনি বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বানও জানান।
এদিকে, এর আগে বিদ্রোহীরা হুমকি দিয়ে বলেছে, সৌদি আরবের বিমান হামলা অব্যাহত থাকলে আত্মঘাতী হামলা চালানো হবে, সৌদি শাসনব্যবস্থাও উৎখাত করা হবে।
প্রেসিডেন্ট হাদি বলেন, তাঁর দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ইরান দায়ী। শিয়াপন্থি হুতি বিদ্রোহীদের উসকে দিয়ে তেহরান আসলে আঞ্চলিক অস্থিরতার সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ২১ জাতির দুই দিনব্যাপী এই সম্মেল গতকাল শুরু হয়েছে।
হাদি আরো বলেন, ‘বিদ্রোহীরা ইয়েমেনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি ইরানের পুতুলদের বলতে চাই, তোমরা ইয়েমেনকে ধ্বংস করে দিয়েছ ও আঞ্চলিক সংকট তৈরি করেছ।’
হাদির এই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইরান। তেহরান বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিচ্ছে না বলে ইরান ও হুতি বিদ্রোহীরা বরাবর অস্বীকার করে আসছে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইয়েমেনের শিয়া বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে গতকাল শনিবার রাতেও বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। বন্দরনগরী এডেনে হাউথি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে গত বুধবার শুরু হওয়া এই বিমান হামলায় এ পর্যন্ত শিশুসহ ৪৫ জন নিহত হয়েছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক উপপরিচালক জো স্ট্রক বলেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী ও হুতি বিদ্রোহী উভয় পক্ষের হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে।
কয়েক মাস ধরে ইয়েমেন সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস অভিযান শুরু করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। গত মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাদি রাজধানী সানা থেকে এডেনে আশ্রয় নেন। বিদ্রোহীরা এডেনের কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর হাদি সৌদি পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি মিসরে আরব সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই ইয়েমেনে আল-কায়েদার শাখা রয়েছে। আল-কায়েদা সদস্যদের রুখতে কয়েক বছর ধরে ইয়েমেন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা ও বিশেষ অভিযানের অনুমতি দিয়ে আসছিল।
দেশটি থেকে মার্কিন বিশেষ বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর পরিস্থিতি আরো অস্থির হয়ে ওঠে। প্রতিবেশী দেশে এ ধরনের বিশৃঙ্খলাকে মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখছে সৌদি আরব। ইয়েমেনের সঙ্গে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।