আলজেরিয়ায় বিক্ষোভ থামছেই না
আলজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকার পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন আবদেল কাদের বেনসালাহ। তবে এতেও থামেনি ওই দেশের বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বুতেফ্লিকার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় বেনসালাহর পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। এখন বেনসালাহর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছে দেশটির জনগণ। এই বিক্ষোভ সমাবেশে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
গত দুই মাস ধরে প্রতি শুক্রবার রাজধানী আলজিয়ার্সসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভের আয়োজন করা হচ্ছে।
এরইমধ্যে ১০৮ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের থামাতে জলকামান ও টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করছে পুলিশ।
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকার পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন বেনসালাহ। তিনি আগামী ৪ জুলাই নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বুতেফ্লিকার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় বেনসালাহর পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ৯০ দিন পদে থাকবেন বেনসালাহ। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এর আগেই তাঁর পদত্যাগ দাবি করছে।
এদিকে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান লেফট্যানেন্ট জেনারেল গাইদ সালাহ এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কোনোভাবেই যেন সংবিধান লঙ্ঘন করা না হয়।
আলজেরিয়ার মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষের বয়স ৩০ এর নিচে। দেশটিতে তরুণদের বেকারত্বের হারও অনেক বেশি। এদিকে আন্দোলনে তরুণদের অংশগ্রহণই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
এর আগে এপ্রিলের শুরুতে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। ২০ বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক সংস্কার ও জবাবদিহির দাবিতে দেশটির মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনীর চাপের কারণে তিনি ২০ বছর ধরে আঁকড়ে রাখা পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বুতেফলিকার পদত্যাগের ঘোষণার পর রাজধানী আলজিয়ার্সে উল্লাসে ফেটে পড়েন দেশটির জনগণ।
১৯৯০-এর দশকে আলজেরিয়ার গৃহযুদ্ধের পর সেনাবাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সম্প্রতি গণবিক্ষোভ শুরু হয়। আর এই বিক্ষোভের কারণে তিনি পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে লড়ার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন।
আর এর পরই অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার নেন আবদেল কাদের বেনসালাহ। কিন্তু বুতেফ্লিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তারও অপসারণ দাবি করে মাঠে নামে হাজারো মানুষ।