বিষাক্ত ‘সাইবেরীয় মালদ্বীপে’ সেলফি তোলার হিড়িক!
নজরকাড়া সেলফি তুলতে সাইবেরিয়ার নোভোসিবার্সক শহরের বাসিন্দাদের দূর দেশের দর্শনীয় পর্যটন স্থানে যাওয়ার দরকার পড়ে না। কারণ, নিজ শহরেই তো রয়েছে উজ্জ্বল নীল পানির এক হ্রদ। স্থানীয়দের কাছে এই হ্রদ পরিচিত ‘সাইবেরীয় মালদ্বীপ’ নামে। প্রতিদিন এই হ্রদে সেলফি তুলতে ভিড় জমাচ্ছেন সংক্ষিপ্ত পোশাক পরা নারীসহ নববিবাহিত দম্পতিরা। নানান ঢঙে সেলফি তুলে তাঁরা ছবিগুলো পোস্ট করছেন নিজেদের ইনস্টাগ্রামে।
তবে হ্রদের পানির রং কেন নীল, এ নিয়ে সংবাদ সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চমকে যাওয়ার মতো তথ্য। স্থানীয় একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য হ্রদের পানিতে মিশে যাওয়ায় বদলে গেছে পানির রং! পানির স্বাভাবিক রং হয়ে গেছে গাঢ় নীল! পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা ওই হ্রদে বেড়াতে যাওয়াদের সতর্ক করে জানাচ্ছেন, এমন বিষাক্ত পানির সংস্পর্শ শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই হ্রদের পানির সংস্পর্শে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
হ্রদে বেড়াতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সারগেই গ্রিভা। তিনি কখনো মালদ্বীপ বেড়াতে যাননি। এমনকি মানচিত্রে মালদ্বীপ নামে কোনো দেশের অস্তিত্ব সম্পর্কেও জানতেন না।
গ্রিভা বলেন, ‘আমাদের এখানকার হ্রদের সঙ্গে কেবল মালদ্বীপের ছবিরই তুলনা চলে।’
রাশিয়ার পরিবেশবিদ দিমিত্রি শাখোভ হ্রদের বিষাক্ত পানির ব্যাপারে সতর্ক করে জানান, এই পানির সংস্পর্শে গেলে অ্যালার্জিসহ শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দিমিত্রি শাখোভ বলেন, ‘এই পানিতে বিভিন্ন ভারী ধাতু ও ক্ষতিকর পদার্থ মিশে গেছে।’
এদিকে সাইবেরিয়ান জেনারেটিং কোম্পানির পক্ষ থেকে গত শুক্রবার জানানো হয়, হ্রদে জনসাধারণের প্রবেশ ঠেকাতে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে হ্রদে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো পদার্থ নেই বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।