দুই দিন প্রচারের পর ইফার দাবি, ফতোয়া তাদের নয়
‘অসুস্থ অবস্থায়ও চেয়ারে বসে নামাজ আদায় বৈধ নয়’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) এমন একটি ফতোয়া গত রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। সেটি ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফতওয়া’ নামে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়।
ফতোয়া নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) শামীম মোহাম্মদ আফজল দুই দিন ধরে বলেন, মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের পথ অনুসরণ করে এবং দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ীই তাঁরা এ ফতোয়া জারি করেছেন। তিনি বলেন- ‘চেয়ার মসজিদের সৌন্দর্য নষ্ট করে।’
ডিজির এ বক্তব্য দেশের গণমাধ্যম এবং এএফপিসহ বিদেশি বার্তা সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু আজ মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বলছে, ফতোয়াটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নয়। এটা ‘হয়তো’ ফাউন্ডেশনের এক গবেষকের ব্যক্তিগত মত। ফতোয়াটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাইয়ের জন্য ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহর নামে জাতীয় পত্রিকায় মসজিদে চেয়ারে বসে নামাজ পড়া বা না পড়ার বিষয়ে যে ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে তা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বক্তব্য নয়। এটা হয়তো তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এ বিষযে ব্যাপক পর্যালোচনা ও সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য দেশের প্রখ্যাত ও বিজ্ঞ আলেম, মুফতি, মুফাসসির ও মুহাদ্দিসগণকে নিয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব মাননীয় ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আজকের (০২/০৬/২০১৫) বোর্ড অব গভর্নরস-এর সভায় অনুমোদিত হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর অতি শীঘ্র তা জাতীয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করা হবে।’
ইফার জনসংযোগ কর্মকর্তা বিল্লাল বিন কাশেম বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ফতোয়াটি নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে একটি সভা আয়োজিত হয়। ওই সভায় সংস্থার মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজল বলেন, ‘চেয়ারে বসে নামাজ আদায় বৈধ নয়’ এ সংক্রান্ত ফতোয়াটি ইফার গবেষণা বিভাগের মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহর নিজস্ব মত। এ সময় সেখানে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও ইফা বোর্ড অব গভর্নরস সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিল্লাল বিন কাশেম আরো জানান, পরে ফতোয়াটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই তা গণমাধ্যমে জানানো হবে।
গত রোববার ইফার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কান্দানিয়া গ্রামের বাসিন্দা সারোয়ার হোসাইনের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এই ফতোয়াটি জারি করা হয়। সারোয়ার হোসাইন জানতে চান, ‘মসজিদে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় শরিয়তসম্মত কি?’ এর জবাবেই মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাদিসের তথ্যসূত্র দিয়ে এ ফতোয়া জারি করেন। পরে তা ইসলামিক ফাউন্ডেশন গণমাধ্যমে পাঠায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ নিয়ে ১২টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ফতোয়াটি বিভিন্ন হাদিসের ১১টি তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।