‘লেখাপড়া করি নাই, ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করি’
ছোটবেলায় পড়াশোনায় ফাঁকি দিলে বা না পড়তে চাইলে মা-বাবা থেকে শুরু করে গুরুজনরা লেখাপড়ায় আরো আকৃষ্ট করার জন্য বলতেন, ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে।’ লেখাপড়া করে অবশ্য গাড়ি কিনে চড়া হয়নি আবদুস সালামের। কিন্তু ঘোড়ায় ঠিকই চড়ছেন কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার এ বৃদ্ধ।
সম্প্রতি চান্দিনা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করছেন তিনি। এলাকায় ‘সালাম ফকির’ নামে পরিচিত। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বয়সের ভারে নুব্জ এই ভিক্ষুক আগের মতো চলতে-ফিরতে পারেন না। দু-এক টাকা ভিক্ষায় বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে চলতেও পারেন না। সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খেতে হয়। তাই প্রবাদ নয়, বাস্তবে ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন সালাম ফকির। এখন আর দু-এক টাকা ভিক্ষা নেন না, কমপক্ষে পাঁচ টাকা!
এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথোপকথনে আবদুস সালাম জানালেন, তাঁর বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বেলতলী বদরপুর গ্রামে। বয়স হয়ে কর্মক্ষমতা ফুরানোর পর ভিক্ষাবৃত্তি করছেন ২০ বছর ধরে। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্য পেশা থাকতে কেন ঘোড়া নিয়ে ভিক্ষা করছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘোড়া দিয়ে ভিক্ষা করি এটা বড় কথা না, আমার এ ঘোড়া দেখে শিশুরা আনন্দ পায় এতে আমিও আনন্দ পাই। তা ছাড়া গ্রামের অনেক শিশু বাস্তবে ঘোড়া দেখতে পায় না, এর সাধও মেটে তাদের।’
কথোপকথনের একপর্যায়ে হাসতে হাসতেই বলেন, ‘লেখাপড়া করি নাই তাই ঘোড়ায় করে ভিক্ষা করি।’
প্রতিদিন কত টাকা আয় হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ৪০০-৫০০ টাকা হলেও ঘোড়ার পেছনে ব্যয় হয়ে যায় প্রায় ২০০ টাকা।