তদন্তের জন্য প্যারিস পৌঁছাল ‘নিখোঁজ’ বিমানের পাখা
ভারত মহাসাগরের আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ফরাসি মালিকানাধীন একটি দ্বীপে পাওয়া বোয়িং ৭৭৭-এর পাখার অংশটি প্যারিসে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ মালয়েশিয়ার এমএইচ৩৭০ বোয়িং বিমানের অংশবিশেষ। নিখোঁজ ওই বিমানের সঙ্গে পাখাটির কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে ফ্রান্সের একটি বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা।
প্যারিসের অর্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বরাতে বিবিসি জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এয়ার ফ্রান্সের একটি বিমান ভগ্নাবশেষটি নিয়ে আসে। এর পর পুলিশ পাহারায় ভগ্নাবশেষটিকে ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত তুলুস নগরীর কাছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি পরীক্ষাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আগামী বুধবার বিশেষজ্ঞরা তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু করবেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছিল, তারা ‘অনেকটাই নিশ্চিত’ ধ্বংসাবশেষ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের হারিয়ে যাওয়া বোয়িং-৭৭৭ বিমানের।
পরিবহন নিরাপত্তাবিষয়ক অস্ট্রেলিয়ার সংস্থা এটিএবি জানিয়েছে, তারা বোয়িংয়ের সঙ্গে কাজ করছে। সংস্থাটির মুখপাত্র জো হ্যাটেলি এএপিকে বলেন, ‘আমরা কিছু ছবি পেয়েছি। এ বিষয়ে জানতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো হয়েছে।’ তবে বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে ছবির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
বিমান বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বোয়িং-৭৭৭ বিমানের পাখার সংযোগের সঙ্গে ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণাধীন দ্বীপে পাওয়া বিমানের ধ্বংসাবশেষের বেশ মিল আছে। তবে বিবিসি এও জানিয়েছে, এটি অন্য কোনো বিমানেরও হতে পারে। কারণ, ধ্বংসাবশেষ অংশটুকু মাত্র দুই বা আড়াই মিটার লম্বা।
মালয়েশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী লিউ তিয়ং বলেন, বিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত প্রমাণ ছাড়া বলা যাবে না, এটিই এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের বোয়িং-৭৭৭ বিমানের ধ্বংসাবশেষ।
গত বছর মার্চে ২৩৯ যাত্রী নিয়ে হারিয়ে যায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০। ওই যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন চীনা নাগরিক। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাচ্ছিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৭৭ বিমানটি। সমুদ্রে দীর্ঘদিন খোঁজের পরও বিমানটির ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা যায়নি। বিমানের ইতিহাসে এটি বড় রহস্য।
ফ্লাইট এমএইচ৩৭০-এর বোয়িং বিমানটির খোঁজে দীর্ঘদিন সাগর চষে বেরিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে এই খোঁজ মূলত চালানো হয় ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশে।