‘নিখোঁজ’ বিমানের দরজার খোঁজ
ভারত মহাসাগরের আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ফরাসি মালিকানাধীন রিইউনিয়ন দ্বীপের সৈকতে ‘নিখোঁজ’ বিমানের আরেকটি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। নতুন পাওয়া ধ্বংসাবশেষটি মালয়েশিয়ার বিমান এম এইচ ৩৭০-এর দরজা বলে দাবি করেছে উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বীপ-শহরটির দক্ষিণাঞ্চলের সেন্ট ডেনিস অঞ্চলে ধ্বংসাবশেষটি পাওয়া গিয়েছে। এরই মধ্যে উদ্ধার করা বিমানের অংশটি পরীক্ষার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ধ্বংসাবশেষটিতে বিদেশি লেখা আর কিছু ইলাস্ট্রেশন শনাক্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে। এবং কিছু বিচিত্র নকশাও মিলেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া দ্বীপের সেন্ট আঁদ্রে প্রান্তে একটি স্যুটকেস পাওয়া গেছে। তার ভেতর কী আছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বছর মার্চ মাসে ২৩৯ যাত্রী নিয়ে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে নিখোঁজ হয়ে যায় বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি। তার পর আর কোনো খোঁজ মেলেনি। সর্বশেষ গত বুধবার ভারত মহাসাগরে মাদাগাস্কারের কাছে রিইউনিয়ন দ্বীপে দুই মিটার দীর্ঘ বিমানের একটি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। পরে সেগুলোকে এমএইচ ৩৭০-এর ধ্বংসাবশেষ বলে চিহ্নিত করা হয়।
ওই ভেসে আসা পাখার অংশটিকে এরই মধ্যে ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তদন্তকারীরা পরীক্ষা করে দেখছেন অংশটি আসলেই এমএইচ ৩৭০-এর কি না। তবে বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে নিঃসন্দেহ যে বিমানের ওই অংশটি কোনো বোয়িং৭৭৭ বিমানের হয়ে থাকবে। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, যেহেতু ওই সময়ে এমএইচ৩৭০ ছাড়া ওই এলাকায় আর কোনো বিমান নিখোঁজ হয়নি তাই ওই অংশটি ‘নিখোঁজ’ বিমানের হওয়াই যুক্তিসংগত।
বিমানটি নিখোঁজের পরই ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ প্রান্তে অস্ট্রেলিয়ার আশপাশে অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল সেখানেই মিলতে পারে বিমান নিখোঁজের সূত্র। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছিলেন, সমুদ্রের স্রোত ধ্বংসাবশেষ টেনে নিয়ে যেতে পারে অনেক দূর। অবশেষে অস্ট্রেলিয়া থেকে তিন হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে সেই সন্ধান পাওয়া গেল। ধ্বংসাবশেষ থেকে এবার বিমানটির নিখোঁজ হওয়ার কারণ খোঁজা শুরু হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন পর সেটা প্রায় অসম্ভব।
ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর অবশ্য বিমানে নিখোঁজদের আত্মীয়দের ক্ষতে মলম পড়েছে, এমনও নয়। বরং তাঁরা বলছেন বিমানের টুকরো পাওয়ার মানে এই নয় যে বিমানযাত্রীরা তার মধ্যেই ছিলেন, বা নিশ্চিতই প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ কেউ বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন।