কে এই মুহিউদ্দিন ইয়াসিন?
মালয়েশিয়ার অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। আজ রোববার সকালে রাজার কাছে শপথ নিয়েছেন তিনি। মাহাথির মোহাম্মদের সরে দাঁড়ানোর পাঁচ দিনের মাথায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন দেশটির রাজা।
মুসলিম বিশ্বসহ সারা দুনিয়ায় মাহাথির মোহাম্মদ যতটা পরিচিতি, সে তুলনায় এই মুহিউদ্দিন ইয়াসিন তেমন কেউ নন। তবে ৫০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সাত-সাতটি মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা ইয়াসিনের অভিজ্ঞতাও কম নয়। মালয়েশিয়ার ক্ষমতাচক্রের শীর্ষে আরোহণের উপায় মুহিউদ্দিনের চেয়ে ভালো খুব কম রাজনীতিবিদই জানেন। ১৯৭১ সালে মালয়েশিয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (উমনো) যোগ দেন। পরে এই দলের হয়ে ১৯৭৮ সালে পাগোহ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। পররাষ্ট্র এবং বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পদেও ছিলেন ৭২ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।
নিজ শহর জোহরে এক বিলিয়ন মালয়েশীয় রিঙ্গিতের শিক্ষানগরী প্রকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মুহিউদ্দিন। এমন নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি।
উমনোর হয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ক্ষান্ত দিয়ে ২০১৬ সালে মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে নতুন দল গঠন করেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। নতুন দল প্রিবুমি বেরসাতু মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। মাহাথিরকে দলটির চেয়ারম্যান করা হয় এবং মাহাথিরের ছেলে মুখরিজ হন ওই দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট পাকাতান হারাপান ক্ষমতায় থাকার সময় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মুহিউদ্দিন। দেশটির ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সময়ে ছয় বছর উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে মুহিউদ্দিনকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেন নাজিব। নাজিব রাজাকের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে কথা বলায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাহাথিরের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি। এ ছাড়া পাকাতান হারাপানের উপপ্রধান হিসেবেও দায়িত্বে আছেন।
নয় বছর মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য জোহরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মুহিউদ্দিন। বাবা প্রভাবশালী ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব মালয় থেকে ১৯৭০ সালে অর্থনীতি ও মালয় স্টাডিজে স্নাতক সম্পন্ন করেন মুহিউদ্দিন।
প্রধানমন্ত্রীর পদ পেতে নিজের সাবেক দল উমনোর সমর্থন নিয়েছেন মুহিউদ্দিন। এ ছাড়া পিএসএর সংসদ সদস্যরা তাঁকে সমর্থন দেন। তবে উমনোর সঙ্গে তাঁর এই সখ্যর সমালোচনা করেছেন মাহাথির মোহাম্মদ। এমনকি মাহাথির তাঁকে বিশ্বাসঘাতকও বলেছেন।