সিঙ্গাপুরে ২০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক কোয়ারেন্টিনে
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় সিঙ্গাপুরে ২০ হাজার অভিবাসী শ্রমিককে ১৪ দিন তাদের ডর্মিটরি বা আবাসস্থলে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে শ্রমিকরা থাকেন এমন দুটি ডর্মিটরি আলাদা করে ফেলা হয়েছে। পাঙ্গল এলাকায় এস-১১ ডর্মিটরিতে থাকেন ১৩ হাজার শ্রমিক। সেখানে এরই মধ্যে ৬৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। ওয়েস্টলাইট টোহ গুয়ান ডর্মিটরিতে থাকেন ছয় হাজার ৮০০ শ্রমিক, যাঁদের মধ্যে ২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এসব ডর্মিটরিতে মূলত দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নির্মাণ শ্রমিকরা থাকেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই দুটি আবাসিক ভবনে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের নিজেদের কামরা ও ব্লক থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাঁদের রুম বা ফ্লোরে থাকে না, এমন মানুষের সঙ্গেও মিশতে নিষেধ করা হয়েছে।
আবাসিক ভবন দুটিতে থাকা শ্রমিকদের রোজ তিনবেলা করে খাবার দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।
ভবনদুটির প্রতিটি কামরায় বসবাসরত মানুষের সংখ্যা ভবনভেদে একেক রকম। ২০১৫ সালে বিবিসির এক অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছিল, কোনো কোনো কামরায় ১২ জন শ্রমিকও থাকেন।
এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ আগাম সতর্কতামূলক অনেক ব্যবস্থা নিলেও, দেশটিতে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে।
জাপানে কি জরুরি অবস্থা?
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জাপান সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আজ সন্ধ্যায় আলোচনায় বসবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ওই বৈঠকের পরই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত জাপানে তিন হাজার ৬০০ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছে ৮৫ জন।
নিউইয়র্কে আক্রান্তের হার কমেছে
নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ওই অঙ্গরাজ্যে গতকাল রোববার ৫৯৪ জন মারা গেছে। এর আগের দিন সেখানে মারা গিয়েছিল ৬৩০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের পরিস্থিতিকে ‘সুড়ঙ্গের শেষে আলোর দেখা পাওয়া গেছে’ বলে বর্ণনা করেছেন। তবে মৃত্যুর হার কমাকে সাময়িক অগ্রগতি বলে মনে করেন মার্কিন উপদেষ্টা ড. অ্যান্থনি ফসি।
ড. অ্যান্থনি ফসির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন মার্কিন সার্জন জেনারেল জেরোমি অ্যাডামস। তিনি মনে করেন, আগামী সপ্তাহগুলো হবে ‘খুবই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং’ সময়। যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ২০০ মানুষ মারা গেছে। সেইসঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসি, ডেট্রয়েট ও নিউ অর্লিয়েন্সে এখনো করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যে কারণে মাস্ক ও ভেন্টিলেটরের মতো মেডিকেল সরঞ্জামের স্বল্পতা বহুগুণ বাড়বে বলে অনেক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এরই মধ্যে সতর্ক করেছেন।
বিশ্বের অন্যান্য স্থানের অবস্থা
ইউরোপের স্পেন ও ইতালিতেও সম্প্রতি করোনায় আক্রান্তের হার কমে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে লকডাউনের ফলে সেখানে এ উন্নতি হয়েছে।
এদিকে, কোয়ারেন্টিনে যেতে রাজি না হওয়ায় তাইওয়ানের নাগরিক এক নারীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। অন্যদিকে, বাজারে আসা ক্রেতাদের ওপর ইচ্ছে করে কাশি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিউজিল্যান্ডে এক ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছেন আদালত।