সরকার চাইলে এক ঘণ্টার মধ্যে সরে যাব : শাবি উপাচার্য
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য আমিনুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, সরকার চাইলে তিনি এক ঘণ্টার নোটিশে সরে যেতে প্রস্তুত আছেন। পাশাপাশি শিক্ষকদের একাংশের আন্দোলনকেও অযৌক্তিক বলে দাবি করেন তিনি।
আজ বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
এদিকে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে তিন দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি, কালো ব্যাজ ধারণ, র্যালি ও সমাবেশ করছেন ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। তারা সমাবেশে উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপাচার্য আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি তাঁর আদেশ বলে আমাকে এখানে নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে আন্দোলনের নামে কিছু শিক্ষক সেই নির্দেশনা মানছেন না।
‘সরকার চাইলে এক ঘণ্টার মধ্যেই দায়িত্ব থেকে সরে যেতে রাজি আছি।’
তবে উপাচার্য দাবি করেন, সরকার আগামী ছয় মাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
আন্দোলন চলবে : শিক্ষকদের একাংশ
এ দিকে আজ সকাল ৯টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকরা। এ কর্মসূচি শেষ হয় দুপুর ১২টায়। এ সময় উপাচার্যের পক্ষের শিক্ষকরা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেন। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১১টায় কর্মবিরতির সময় কালো ব্যাজ ধারণ করে ক্যাম্পাসে র্যালি করেন। পরে সমাবেশ করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক সৈয়দ সামসুল আলম। বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হক, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও সহযোগী অধ্যাপক ফারুক উদ্দিন। র্যালি ও সমাবেশে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালও উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে শিক্ষকরা উপাচার্যকে ‘মিথ্যুক’ বলে উল্লেখ করেন। আগামীকাল প্রতীকী অনশন কর্মসূচি চলবে বলে জানান শিক্ষকরা।
গত ১২ এপ্রিল থেকে আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের একাংশ উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। গত রোববার এ দাবিতে উপাচার্য ভবনের সামনে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যানার কেড়ে নেয় এবং তাঁদের লাঞ্ছিত করে।
এ ঘটনার পর আন্দোলনরত ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষকদের ওপর হামলা ও সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগে চারজনকে বহিষ্কার করে। এর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুজন সহসভাপতি ও একজন যুগ্ম সম্পাদককে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।