অস্ট্রিয়ায় পৌঁছেছে চার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী
কয়েক হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী হাঙ্গেরি থেকে অস্ট্রিয়ায় পৌঁছেছে। গতকাল শুক্রবার অস্ট্রিয়া সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়ার পর অভিবাসীদের সেখানে পৌঁছে দিতে হাঙ্গেরি বাসসেবা চালু করে।
অস্ট্রিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত চার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী দেশটিতে পৌঁছেছে। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ওয়ারনার ফ্যাম্যান বলেন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে আলোচনার পর হাঙ্গেরি এই ‘জরুরি পরিস্থিতিতে’ দুই দেশই অভিবাসীদের ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, কয়েক দিন ধরে রেলস্টেশনে অবস্থান করছিল মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীরা। ট্রেনে করে পশ্চিম ইউরোপে যেতে অভিবাসীদের বাধা দিচ্ছিল হাঙ্গেরি। তাদের রেজিস্ট্রেশন করানোর চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। ট্রেনে উঠার সময় কর্মকর্তা ও অভিবাসীদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্টেশনেই আশ্রয় নেয় অভিবাসন প্রত্যাশীরা।
অভিবাসীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে অস্ট্রিয়া সরকার বলছে, তাদের সীমান্ত দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীরা জার্মানিতেও যেতে পারবে। আর অভিবাসন সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গতকাল শুক্রবার রাতে অভিবাসীবাহী বাসগুলো বুদাপেস্টের কেলেতি স্টেশনে পৌঁছায়। মধ্যরাত থেকেই হাঙ্গেরি সরকারের তত্ত্বাবধানে বিশেষ বাসগুলো শরণার্থীদের অস্ট্রিয়া সীমান্তে পৌঁছে দিতে শুরু করে । এর আগে শরণার্থীরা পুলিশের লাইন ভেঙে বেরিয়ে এসে প্রধান সড়ক ধরে অস্ট্রিয়ার দিকে হাঁটতে শুরু করে। বাসগুলো পৌঁছালে অনেক অভিবাসী প্রত্যাশী আশঙ্কা করে, তাদের জার্মানিতে পৌঁছে দেওয়ার বদলে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। কিন্তু পরে তারা বিষয়টি বুঝতে পারে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, শত শত মানুষ প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। বাস তাঁদের নিয়ে সীমান্তের কাছে পৌঁছে দেয়। অভিবাসন প্রত্যাশীদের হেঁটে সীমান্ত পার হতে হয়। তাদের মধ্যে শিশুও ছিল। এক ব্যক্তিকে হুইল চেয়ারে করে সীমান্ত পার হতে দেখা যায়।
সীমান্তে পৌঁছালে অস্থায়ী কেন্দ্রে অস্ট্রিয়ার রেডক্রসের কর্মীরা স্বাগত জানিয়ে তাদের কম্বল ও চা দেয়। অস্ট্রিয়ান পুলিশ জানায়, আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত চার হাজার অভিবাসী পৌঁছেছে। প্রথম যে অভিবাসী অস্ট্রিয়ায় পৌঁছেছেন তার নাম আয়াজ মুরাত। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে নিজের দেশে আছি। এটি একটি মহান রাষ্ট্র এখানকার মানুষ ভালো, সরকার ভালো।’ সিরিয়ান শরণার্থী মোহাম্মদ জানান, তিনি খুবই খুশী। তবে তিনি হাঙ্গেরি সফরের ব্যাপারে অন্য সিরিয়ানদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এখানকার পরিস্থিতি খুব খারাপ।
এদিকে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া, ইরান ও আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের মধ্য থেকে ইউরোপের প্রত্যেক দেশকেই সর্বোচ্চ দুই লাখ অভিবাসীকে স্থান দেওয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। কিন্তু বাধ্যতামূলকভাবে শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে রাজি নয় মধ্য ইউরোপের দেশগুলো। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিকান, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি। যদিও ওই প্রস্তাবের পক্ষে রয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় কমিশন।