হংকংয়ের লাইব্রেরিগুলো থেকে গণতন্ত্রের বই উধাও
চীনের আরোপিত বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর হংকংয়ের লাইব্রেরিগুলো থেকে সেখানকার গণতন্ত্রপন্থীদের লেখা সব বই উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লাইব্রেরি পরিচালনা কর্তৃপক্ষ বলছে, বইয়ের লেখাগুলো পুনঃপর্যালোচনা করে দেখা হবে, তাতে নতুন নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘিত হয়েছে কি না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, হংকংয়ের জন্য চীন প্রণীত নতুন এই জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকার পতন, সন্ত্রাসবাদ ও ‘জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাতমূলক যেকোনো কাজ’ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিরোধীরা বলছে, চীন প্রণীত এই আইন দেশটির আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের স্বাধীনতার অবক্ষয় ঘটানোর জন্যই তৈরি করা হয়েছে। তবে বেইজিং বারবার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে আসছে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে হংকংয়ের অধিকার পাওয়ার পর অন্তত ৫০ বছর স্বাধীনতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বেইজিং।
গত মঙ্গলবার (৩০ জুন) হংকংয়ে কথিত এই নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে গণতন্ত্রপন্থী বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী তাঁদের ভূমিকা থেকে সরে এসেছেন। তাঁদেরই একজন, যিনি এককালের ছাত্রনেতা এবং স্থানীয় আইনপ্রণেতা, নাথান ল অঞ্চলটি ছেড়ে অন্য দেশে পালিয়ে গেছেন।
হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত ৯টি বই উধাও হয়েছে কিংবা ‘পুনঃপর্যালোচনাধীন’ নাম লেখা চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে বিশিষ্ট তরুণ গণতন্ত্রপন্থী কর্মী জোশুয়া ওং এবং গণতন্ত্রপন্থী রাজনীতিবিদ তানয়া চ্যানের লেখা বইও।
পাবলিক লাইব্রেরির ওয়েবসাইট অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওং, চ্যান এবং স্থানীয় পণ্ডিত চিন ওয়ানের কমপক্ষে তিনটি বই আর পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার (৪ জুলাই) জোশুয়া ওং বলেন, নতুন আইনটিতে হংকংয়ে চীনা ধাঁচের একটি সেন্সরশিপের নিয়ম আরোপিত হয়েছে, যা আদতে বই নিষিদ্ধের পদক্ষেপ থেকে এক ধাপ দূরের পদক্ষেপ।
সমালোচনা উপেক্ষা করেই চীনের পার্লামেন্টে কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই সর্বসম্মতিক্রমে ৩০ জুন চূড়ান্তভাবে আইনটি পাস হয়। পাস হওয়ার পর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ওই দিনই আইনটিতে স্বাক্ষর করেন। এরপর মঙ্গলবার মধ্যরাতেই হংকং সরকার গেজেট প্রকাশ করলে আইনটি কার্যকর হয় হংকংয়ে।